ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাপুল পরিবারের চার সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

পাপুল পরিবারের চার সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের ৪ সদস্যের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অন্য সদস্যরা হচ্ছেন সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের দেশের আটটি ব্যাংকে এই চার জনের মোট ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব পেয়েছে দুদক। দুদক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। দুদক সূত্র জানায়, ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩০ দশমিক ২৭ একর জমি এবং গুলশানে একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব সম্পত্তিও জব্দ তালিকায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে এনআরবিসি ব্যাংকে ৫৯০টি, প্রাইম ব্যাংকে ১৩টি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে চারটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে দুটি এবং সিটি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকে একটি করে হিসাব পাওয়া গেছে। এছাড়া ভূ-সম্পত্তির মধ্যে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় ২২ একর, হোমনায় সাড়ে সাত একর ও সিলেটে ৪৯ শতাংশ জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের সিইএন ডি-২ বাড়ির ৮/এ ও বি ঠিকানায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুদক। উল্লেখ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে কাজি শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে গত ১১ নবেম্বর একটি মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপপরিচালক মোঃ সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় পাপুল- সেলিনা দম্পতির অবৈধ অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিং করে বৈধতার রূপ দিতে সহযোগিতা করেন। এজন্য ‘লিলাবালি’ নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছিলেন। মূলত এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই জেসমিন প্রধান পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করেছেন। এছাড়া জেসমিন প্রধানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় ৪৪টি হিসাব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেই রয়েছে ৩৪টি এফডিআর হিসাব। তার বোনের স্বামী এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। চলতি বছরের ১৭ জুন পাপুলের স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, ২২ জুন সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত ও ২২ জুলাই জেসমিন ও সেলিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
×