ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হল খুলে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে সরব ঢাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

হল খুলে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে সরব ঢাবি শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল খুলে দেয়ার পর পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে সরব হয়েছে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে মানববন্ধন করেন কিছু শিক্ষার্র্থী। একই দাবিতে সেখানে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার নেতাকর্মীরা। এছাড়া দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রদল। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো পরীক্ষা নেয়ার পূর্বে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ দেয়া, প্রয়োজনে মেকাপ ক্লাসের ব্যবস্থা করা, একসঙ্গে দুই সেমিস্টার ফাইনাল না নেয়া, এক সেমিস্টার শেষ করে পরবর্তী সেমিস্টারের প্রস্তুতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দেয়া, যে সকল বিভাগের পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করা হয়েছে তা বাতিল করে পুনরায় তারিখ ঘোষণা করা এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে যাতায়াতের নিশ্চিত করা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের পরীক্ষাসমূহ নেয়ার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু হল বন্ধ রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কারণ ঢাবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত। বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীর জন্য ঢাকায় থাকার জায়গা ব্যবস্থা করা দুরূহ। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য রীতিমতো একটি ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন হঠাৎ করে ঢাকা শহরে কোথায় থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পরীক্ষা নেয়ার পূর্বে আমাদের এ বিষয়টা চিন্তা করা উচিত ছিল। এ সময় তারা তাদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানান। ছাত্র অধিকার পরিষদের অবস্থান কর্মসূচী ॥ একই দাবিতে বিশ^বিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেন তারা। পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুমানিক ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী হলে থেকে পড়াশোনা করে। এরা সবাই নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। এসব শিক্ষার্থী অধিকাংশই টিউশনি করে চলত। এখন কারও টিউশনিও নাই। সবাই এখন গ্রামে অবস্থান করছে। অনেকের পিতা মাতার আয় উপার্জনও একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অমানবিক। উপাচার্য বরাবর ছাত্রদলের স্মারকলিপি ॥ হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতৃবৃন্দ। এ সময় সেখানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান। দেশে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেশনজট রোধে অনলাইনে পাঠদান চালিয়ে গেলেও এতদিন পরীক্ষা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেশনজট নিরসন ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক ফাইনাল ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
×