ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাজ্য থেকে আগতদের সাতদিন হোম কোয়ারেন্টাইন ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:৪০, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

যুক্তরাজ্য থেকে আগতদের সাতদিন হোম কোয়ারেন্টাইন ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যুক্তরাজ্যে নতুন ভাইরাসের আগ্রাসনেও দেশে লকডাউনের কোন পরিকল্পনা নেই। বরং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বাড়িয়ে সব কাজ চালিয়ে যেতে হবে। তবে যুক্তরাজ্য থেকে আগত যাত্রীদের সবাইকে সাতদিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে। এমন সব তথ্য প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বুধবার রাজধানীর আশকোনা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে জিন এক্সপার্ট টেস্ট এবং ভ্রাম্যমাণ আরটি-পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করতে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি দাবি করেন এটি এশিয়ার বৃহৎ ল্যাব। এ সময় তিনি বলেন, নোভেল করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্টের জন্য দেশে লকডাউনের কোন পরিকল্পনা নেই। সে ধরনের পরিবেশ হয়নি লকডাউনে যাওয়ার মতো। তাই সে চিন্তা করছি না। দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার সক্ষম হয়েছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা সক্ষম হয়েছি। আর নতুন ভেরিয়েন্টের নতুন ধরনের কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে কিনা সে নিয়ে সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করছে। নতুন চিকিৎসা থাকলে সেটাও আমরা গ্রহণ করব। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানার পরিচালনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, আর্মি কোয়ারেন্টাইন ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফ, হজ ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইন ইনচার্জ মেজর মোস্তফা, ডি এম আর ল্যাব প্রধান ফয়জুর রহমান। বর্তমানে দেশের নানা উন্নয়ন সংস্থা, বেসরকারী সংস্থাসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতার করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি এবং চিকিৎসায় এগিয়ে যাচ্ছি। নতুন নতুন উন্নয়ন হচ্ছে চিকিৎসা খাতে। কোভিড চিকিৎসায় প্রথমেই টেস্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুর দিকে দেশে মাত্র একটি আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি ছিল। সেখান থেকে বর্তমানে ১১০টির বেশি ল্যাব রয়েছে। পাশাপাশি আরও আধুনিক টেস্টের জন্য এ্যান্টিজেন এবং জিন এক্সপার্টের মাধ্যমে শুরু করা হয়েছে কয়েকটি জেলায়। এ্যান্টিজেন টেস্ট সব জেলাতেই করা হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় জিন এক্সপার্ট মেশিন রয়েছে, যেটা টিবি (যক্ষ্মা) শনাক্তের কাজে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ৩৩টি জিন এক্সপার্ট মেশিন করোনা শনাক্তের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজন হয় আরও বাড়ানো হবে। পরীক্ষা পদ্ধতির তালিকাতে আরেকটি সংযোজন হলো জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আজ ভ্রাম্যমাণ আরটি-পিসিআর মোবাইল ল্যাব উদ্বোধন করা হলো। আপাতত হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীদের জন্যই এই ভ্রাম্যমাণ ল্যাব কাজ করবে। তবে যেখানে ল্যাব নেই সেখানেও এটি নিয়ে যাওয়া যাবে এবং দ্রুত পরীক্ষা সম্ভব হবে। নমুনা দেয়া ব্যক্তি পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে জানতে পারবেন। জরুরী প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পাঞ্চলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করবে এই ল্যাব। এখানে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার পরীক্ষা করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি। এই ভ্রাম্যমাণ ল্যাব বায়ো সেইফটি লেভেল-২ মানসম্পন্ন। এ হজ ক্যাম্পে স্থাপন করা জিন এক্সপার্ট ল্যাবে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কোভিড-১৯ আছে কিনা তা জানতে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। কিন্তু সব হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল না। বর্তমানে ৭৮টি নতুন সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে করোনা এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত মাসে মৃত্যুর হার একটু বেড়েছিল। তবে এখন মৃত্যুর হার, সংক্রমণ হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সুস্থতার হার বেড়েছে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর কেউ অসুস্থবোধ করলে টেস্ট করে তাকে চিকিৎসা নিতে হবে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশই ষাটোর্ধ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ষাটোর্ধদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে এবং অসুস্থ হলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের সাত দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ‘দেশে এখন সুস্থতার হার ৮৮ শতাংশ। অন্যদিকে আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের ঘরে ওঠানামা করছে, একই অবস্থানে আছে মৃত্যু হার। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা সবাই মিলে করোনা জয় করতে চাই।
×