ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি নিয়ে মহাপরিকল্পনা

অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ বাড়বে

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ বাড়বে

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) নিয়ে মহাপরিকল্পনা (মাস্টারপ্ল্যান) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে নেয়া এ মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। চার ধাপে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেয়ার পরই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে হাত দিয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল সার্ভে করা হয়। ওই ডিজিটাল সার্ভে স্থাপত্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। স্থাপত্য অধিদফতর নক্সা প্রণয়ন করছে। এখন এই নক্সা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে। এই কাজটি বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদফতর। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ জনকণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রথম পর্যায়েই সংস্কারের অভাবে নষ্টের পথে ঐতিহ্যবাহী কার্জন হল মেরামত করে সংরক্ষণ করা হবে। বহিরাগতদের অবাধ যাতায়াতও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের নান্দনিক পুকুরটি সংরক্ষণ করে বসার জায়গা তৈরি করা হবে। প্রযুক্তিগত ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, আবাসন সংকট দূর, বিশ্বমানের লাইব্রেরি সুবিধা, পার্কিং, যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সবুজায়ন, খেলার মাঠের আধুনিকায়ন, সোলার এনার্জি স্থাপন, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম ও সব সুবিধা সংবলিত আধুনিক মেডিক্যাল সেন্টার থাকবে। মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় ২৩ ভবন নির্মাণ ও সংস্কার এবং নতুন নতুন হল নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ভবন আলাদা রং দিয়ে চিহ্নিত থাকবে। পুরনো প্রশাসনিক ভবন ভেঙ্গে নির্মাণ করা হবে প্রশাসনিক ভবন। ত্রিকোণাকৃতির ভবনের মাঝামাঝি থাকবে উপাচার্যের অফিস। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির একটি অংশ ভেঙে ১০ তলা ভবন করা হবে। ই-লাইব্রেরির জন্য থাকবে পর্যাপ্ত জায়গা। ডাকসুর বহুতল ভবন তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হবে জাদুঘর। প্রতিমন্ত্রী জনকণ্ঠকে বলেন, পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, আবাসন সংকট দূর, বিশ্বমানের লাইব্রেরি সুবিধা, পার্কিং, যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সবুজায়ন, খেলার মাঠের আধুনিকায়ন, সোলার এনার্জি স্থাপন, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুলসহ আধুনিক মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করা হবে। ২৩ ভবন নির্মাণ ও সংস্কার এবং নতুন নতুন হল নির্মাণ করা হবে। কিছু ভবন ভেঙ্গে ফেলা হবে। ঐতিহ্যবাহী কিছু ভবন সংস্কার করে রেখে দেয়া হবে। দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলতে যা কিছু করা প্রয়োজন মহাপরিকল্পনায় তার সবকিছু রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা থাকবে গণপূর্ত অধিদফতর। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষ। এখন মূল কাজে হাত দেয়া হবে। গণপূর্ত অধিদফতরের (ডিবিশন-৪) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল সার্ভে গণপূর্ত অধিদফতর গ্রহণ করে নিয়ে স্থাপত্য অধিদফতের পাঠানো হয়। স্থাপত্য অধিদফতর নক্সা প্রণয়নের কাজ শেষ করেছে। দু’ একদিনের মধ্যে ওই নক্সা আমরা হাতে পাব। নক্সা হাতে পাওয়ার পর আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠাব। সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে এলে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। প্রকল্পের ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলো যেমন আছে ঠিক তেমনিই থাকবে। তবে ভবনগুলো সংস্কার করা হবে। তাছাড়া বেশ কিছু নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের ক্যাম্পাস হবে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন। বিশ্বের অনেক নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পস যে ধরনের আছে ওই ধরনের ক্যাম্পাস হবে।
×