ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এক চোর ধরতেই ৩৪ বছর

প্রকাশিত: ২২:১১, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

এক চোর ধরতেই ৩৪ বছর

শংকর কুমার দে ॥ এক চোরকে ধরতেই কেটে গেছে ৩৪ বছর। চোর ধরার জন্য ৩৪ বছরে দায়িত্ব পেয়েছেন ১২০ পুলিশ কর্মকর্তা। চোরের নাম নুরুল ইসলাম। সে কোন পেশাদার চোর নয়। কর্মস্থল থেকে নগদ দশ হাজার টাকা ও একটি বাইসাইকেল চুরি করেছিল সে। তার অনুপস্থিতিতে বিচার হয়। সাজা হয় দুই বছর। অবশেষে যখন চোর গ্রেফতার হয় তখন বের হয়ে আসে চোরের আত্মকাহিনী। পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা গেছে। রাজধানী ঢাকার অদূরে গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি কোম্পানিতে অফিস সহকারী পদে চাকরি করত নুরুল ইসলাম। ওই কোম্পানি থেকে নগদ দশ হাজার টাকা ও একটি বাইসাইকেল চুরি করে পালিয়ে যায় সে। কোম্পানি তার বিরুদ্ধে মামলা করে টঙ্গী থানায়। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে তদন্ত চলে। তদন্ত চলাকালীন তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হয়ে যায়। এভাবে ১২০ কর্মকর্তা বদলি হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে গ্রেফতার হয় সেই চোর। ১৯৮৬ সালের কথা। নুরুল ইসলামের তখন বয়স ছিল ২৪ বছর। টগবগে এক তরুণ তখন সে। এখন তার বয়স ৫৮ বছর। প্রৌঢ়ত্বের ছাপ শরীওে ও মুখায়বে। কোম্পানির দায়ের করা মামলা মাথায় নিয়ে যুবক থেকে বৃদ্ধ হয়েছে। বিয়ে করেছে। সংসার পেতেছে। দীর্ঘ ৩৪ বছরে হয়তবা সবাই ভুলে গেছে তার অতীত কৃতকর্ম। কিন্তু না, শেষ পর্যন্ত তাকে ধরা পড়তেই হলো। ১৯৯৪ সালের কথা। কোম্পানির দায়ের করা মামলা ওঠে আদালতে। তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলে। রায় ঘোষণা করে বিচারক। তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দীর্ঘ ৩৪ বছর পর অবশেষে মাগুরা শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করে লোহাগড়া থানা পুলিশ। মাত্র দশ হাজার টাকা ও একটি বাইসাইকেল চুরি করে দীর্ঘ ৩৪ বছর ফেরার জীবন কাটিয়ে দিয়েছে নুরুল ইসলাম। গাজীপুরের আদালত ১৯৯৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় নুরুল ইসলামকে। কারাদণ্ডের পর ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়েই এতদিন ঘুরছিল সে। বিচারের পর ওয়ারেন্ট তামিলসহ গ্রেফতার প্রক্রিয়ায় কেটে গেছে ৩৪ বছর। আলোচ্য বছরে তাকে গ্রেফতার করতে দায়িত্ব পান ১২০ পুলিশ কর্মকর্তা।
×