ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভুয়া সনদে ১৬ বছর শিক্ষকতা

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

ভুয়া সনদে ১৬ বছর শিক্ষকতা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২০ ডিসেম্বর ॥ ধামইরহাট উপজেলার লক্ষণপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভুয়া বিএড সনদে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক শিক্ষক ১৬ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ২০০৩ সালে আব্দুল্লাহ আল মামুন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে জ্যেষ্ঠতা ভেঙ্গে ২০০৫ সালে প্রভাব খাটিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে আসীন। সরকারী বিধি মোতাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ পেতে ন্যূনতম ১০ বছর সহকারী শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক অবসর গ্রহণ করায় উক্ত পদে আব্দুল্লাহ-আল-মামুন প্রার্থী হিসেবে দাখিলকৃত ২০০৬ সালের আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং ২০১৪ সালের রয়েল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপস্থাপিত ২টি বিএড সনদ ভুয়া বলে কমিটি জানতে পারে। নিয়োগে অনিয়ম ও ভুয়া সনদের কারণে সম্প্রতি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বিদ্যালয় কমিটি কারণ দর্শানোর নোটিস প্রদান করলে আব্দুল্লাহ আল মামুন নোটিস গ্রহণ করেননি এবং কর্তৃপক্ষকে কোন সদুত্তরও প্রদান করেননি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, আব্দুল্লাহ আল মামুনের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ, তিনি মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে জ্যৈষ্ঠতা ভেঙ্গে সহকারী প্রধান হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন যা বিধিসম্মত নয়। তার দাখিলকৃত ভুয়া সনদ প্রদানের জন্য আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে বরখাস্তকরণের জন্য বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। বোর্ড অনুমোদন দিলেই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করা হবে। অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সব বগলদাবা করে রেখেছেন জন্য আমরা উর্ধতন মহলে বিষয়টি অবগত করেছি। নোটিস বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল মামুনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি নতুন নোটিস গ্রহণ করেছি এবং সদুত্তর প্রদান করেছি। আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং রয়েল ইউনিভার্সিটির বিএড সনদ দুটি ভুয়া কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সনদ দাখিল করেছি, রয়েল ইউনিভার্সিটি সনদ দাখিল করিনি। ওই সময় সহকারী প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য সরকারী ছাড় ছিল তার কাগজ আমার কাছে আছে। আমি প্রধান শিক্ষক হতে চাই না মর্মে আবেদনপত্র দাখিল করেছি কমিটির নিকট। কমিটি আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি আমিনুল হক বলেন, আমি এডহক কমিটির দায়িত্বে আছি। আমরা এই মুহূর্তে বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রদান করতে পারব না। তিনি আরও বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিয়োগে অনেক ত্রুটি আছে। তার বিএড সনদ ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন যে কারণে বিদ্যালয় কমিটি তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। নিয়োগে ত্রুটি বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘নিয়োগের সময় সহকারী প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছিল না। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ছিল যার জন্য সে সময় তিনি বেতনও পাননি। তবে সনদ ত্রুটি বা অন্যান্য বিষয়টি অধিদফতর দেখবে।
×