ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফিলিস্তিনী ভূমি দখলের প্রতিবাদে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

ইসরাইলী বর্বরতার বিরুদ্ধে কানাডা

প্রকাশিত: ২০:১৮, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

ইসরাইলী বর্বরতার বিরুদ্ধে কানাডা

ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলী বর্বরতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কথা বলেছে কানাডা। ফিলিস্তিনীদের জমি দখল করে অবৈধভাবে ইহুদী বসতি নির্মাণের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বুধবার একটি প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবটির পক্ষে ১৬৮ ও বিপক্ষে মাত্র ৫ ভোট পড়ে। কানাডা ফিলিস্তিনীদের জমি দখলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। খবর জেরুজালেম পোস্ট অনলাইনের। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের অধীবেশনে একই বিষয় নিয়ে ভোটাভুটি হয়। ওই বছর কানাডা ভোটদানে বিরত থাকে। গত বছর কানাডা ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, ক্যামেরুনন, আইভরি কোস্ট, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, কিরিবাতি, পালাও, দক্ষিণ সুদান, টোগো ও টঙ্গো- এই ১০ দেশ ইসরাইল বিরোধী প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল। এ বছরও ওই ১০ দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, মার্সাল আইল্যান্ড, নাওরু ও মাইক্রোনেশিয়া। জাতিসংঘে কানাডা বরাবরই ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করলেও এবার ফিলিস্তিনী মানবাধিকারের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এদিকে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ফিলিস্তিনীদের নিজ ভূখণ্ডের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া হবে না। ইমরান বলেন, পাকিস্তান একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমাদের গোটা জাতি ফিলিস্তিনীদের পক্ষে। যতক্ষণ না ফিলিস্তিনীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, ততক্ষণ আমরা কিছুতেই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেব না। শনিবার এক টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে ইমরান খান এসব কথা বলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা সম্প্রতি ইসরাইল সফর করেছেন বলে ইসরাইলী গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেন ইমরান। তিনি এ প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ইসরাইলকে যেহেতু ইসলামাবাদ স্বীকৃতিই দেয় না, তা হলে কেন পাকিস্তানের মন্ত্রী কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তেলআবিব সফর করবেন? এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রতিবেদন। একই দিন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তেলআবিবে ইসরাইল ও পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের কোন বৈঠক হয়নি। আবুধাবিতে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। গত সপ্তাহে ইসরাইলের কয়েকটি পত্রপত্রিকা খবর দিয়েছে যে, ইমরান খানের একজন শীর্ষ পর্যায়ের উপদেষ্টা গত মাসে গোপনে ইসরাইল সফর করেছেন। প্রচারমূলক ওই খবরে ইসরাইলী গণমাধ্যমগুলো দাবি করেছিল যে, ইমরান খানের পক্ষ থেকে বিশেষ বার্তা বহন করে নিয়ে গেছেন ওই উপদেষ্টা। ইসরাইলী গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে যে, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আগ্রহ নিয়ে ইমরান খান তার উপদেষ্টাকে বার্তা পাঠিয়েছেন। ইসরাইলের প্রভাবশালী পত্রিকা জেরুজালেম পোস্টও এ খবর প্রকাশ করেছিল; কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এ প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, তার সরকারের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচারে ভারতের হাত থাকতে পারে। তিনি বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিনীদের ভূখণ্ডের দাবি ইসরাইল সম্মান জানাবে এমন আশা করে পাকিস্তান। জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী দাবি করে আসছে ফিলিস্তিন। পাকিস্তান তাদের এ দাবিকে ন্যায্য বলে সমর্থন দিয়ে আসছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কয়েকটি মুসলিম দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র দেশ ভুটানও ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে। ভারতের পর ভুটানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় শক্ত অবস্থান তৈরির পথে এগুচ্ছে ইসরাইল। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ভুটান ইসরাইলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। দিল্লীর ইসরাইলী দূতাবাসে ভুটান ও ইসরাইলী রাষ্ট্রদূতের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরব, ওমান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো এশিয়ার কয়েকটি দেশ ভবিষ্যতে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। এ দেশগুলো ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের ঘোর বিরোধী ছিল।
×