ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ওরা বাংলাদেশকে সহ্য করতে পারে না ॥ পরিকল্পনামন্ত্রী

ভাস্কর্য রক্ষায় আইন তৈরির আহ্বান নির্মূল কমিটির

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

ভাস্কর্য রক্ষায় আইন তৈরির আহ্বান নির্মূল কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যারা ভাস্কর্য ভাংচুর করছে তাদের সমস্যা ভাস্কর্য নয়, তাদের সমস্যা বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। স্বাধীনতার যেমন নতুন প্রজন্ম আছে তেমনি স্বাধীনতাবিরোধীদেরও নতুন প্রজন্ম আছে, এটাই সমস্যা বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। একই অনুষ্ঠানে ভাস্কর্য রক্ষায় আইন তৈরির জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। শনিবার শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। ভাস্কর্য ভাংচুরকারী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের উদ্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এই যে কয়েকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে ভাস্কর্য নিয়ে। ভাস্কর্য কোন বিষয় নয়, এটা একটা ছুতা (অজুহাত)। আসল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ। এরা বাংলাদেশটাকে সহ্য করে না, আমার ধারণা। তাদের (স্বাধীনতা বিরোধী) কথা শোনেন ভাষা শোনেন, এগুলো আমাদের ভাষা নয়। আমাদের ভাষা ঠেলে তারা অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের পোশাক দেখেন, খাবার দাবার দেখেন, চাল চলন দেখেন সবকিছু বিকৃতি করা হয়েছে। শিল্প সংস্কৃতি তাদের নেই, তাদের আছে দেশ বিরোধিতা। যেখানে বাংলা, বাঙালী সেখান থেকে পেছন দিকে যাওয়ার প্রচেষ্টা তাদের আছে সবকিছুর মধ্যে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কথা বলে যদি কেউ মনে করে সমাধান হয়ে যাবে আমি এটা মনে করি না। এটা আলোচনার বিষয় না এটা অত্যন্ত গভীর একটা বিষয়। সভায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্প মলয় কুমার গাঙ্গুলী ও শাহরিয়ার কবিরকে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির সংবিধানের ২৪ ধারার আলোকে ভাস্কর্য রক্ষায় আইন তৈরির জন্য সরকারকে আহ্বান জানান। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে লক্ষ্য করে শাহরিয়ার কবির বলেন, সংবিধানের ২৪ ধারায় উল্লেখ করা আছে ‘বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎপর্যমন্ডিত স্মৃতিনিদর্শন, বস্তু বা স্থানসমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হইতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুসহ বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙ্গা হয়েছে, যা আমাদের স্মৃতি নির্দশনকে বিনষ্ট করছে। সংবিধানে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এগুলোকে রক্ষার কথা উল্লেখ থাকলেও এ নিয়ে কোন আইন নেই। তাই ঐতিহাসিক স্মৃতি নির্দশনগুলো রক্ষার জন্য এখন আইন প্রণয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টা মাথায় রেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সড়কের পাশে সরস্বতীরও ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু সরস্বতী যখন সড়কে থাকে তখন সে ভাস্কর্য, যখন সে মন্দিরে থাকে তখন সে দেবী। শাহরিয়ার কবির বলেন, যে রাজনীতি বাংলাদেশের সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করে সে রাজনীতি দেশে থাকতে পারে না। ধর্ম ও রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। একে অন্যের সঙ্গে মেশানো যাবে না। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য সারওয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী প্রমুখ।
×