স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম ঘটনাটির নেপথ্যে ছিলেন একজন বিশেষ মেজর। নিজে আড়ালে থেকে স্বাধীনতার মহান স্থপতিকে হত্যার সুযোগটি করে দিয়েছিলেন ষড়যন্ত্রকারীদের। সেই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পুরস্কারস্বরূপ বিশেষ মেজরের পৃষ্ঠপোষকতায় কতিপয় মেজর রাজারহালে থাকত এক মরুভূমির দেশে। উল্টোপিঠে নির্মম হত্যকাণ্ডের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশেষ মেজর হয়ে যান রাষ্ট্রপতি। ক্ষমতাসীন হয়ে তিনি ইনডেমনিটি আইন করে হত্যাযজ্ঞের শিকার নারী, শিশুসহ সর্বোপরি জাতির পিতার হত্যাকারী মেজরদের সুরক্ষা করেন। অন্যদিকে ব্রাশফায়ারে ঝাঝরা করে দেয়া পিতার বুকের লালখুন আর নববধূর মেহেদির রং মুছে দেয়া মেজররা থাকেন বহাল তবিয়তে। এই বিশ্বাসঘাতকদের দাম্ভিকতায় কলঙ্কিত হয় বাংলার ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের মাটি। ষড়যন্ত্র আর নির্মমতার সাক্ষ্যবহ এমনই এক নাটক মেজর। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রযোজনাটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে। যৌথভাবে নাটকটি মঞ্চে এনেছে নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর ও শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র। আবুল ফজলের ‘মৃতের আত্মহত্যা’ গল্প অবলম্বনে নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্ত হিরা।
নাটকের ঘটনাপ্রবাহে উঠে আসে বিশেষ মেজরের শাসনামলে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা খুনী মেজররা কেমন ছিল? ওই খুনীদের মা বাবা ভাই বোন স্ত্রী সন্তান আত্মীয়স্বজন বন্ধু প্রতিবেশী আর কিংবা দেশের মানুষ কিভাবে, কোন দৃষ্টিতে দেখছে তাদের? এমন অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে মেজর নাটকে। পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে নিরন্তরভাবে ঘুরে ফেরা সেসব প্রশ্নের জবাব খোঁজার প্রয়াস নেয়া হয়েছে প্রযোজনাটিতে। অনেক অজানা প্রশ্নের জরুরী উত্তর মেলে ধরা হয়েছে নাটকের গল্পে। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নাট্যকার ও নির্দেশক অনন্ত হিরা জনকণ্ঠকে বলেন, এই নাটকটি মঞ্চে নিয়ে আসা একটি সাহসী পদক্ষেপ। সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয় যুক্ত হয়েছে নাটকটির ঘটনাপ্রবাহে। এর আগে মঞ্চনাটক, টিভি কিংবা চলচ্চিত্রেও এই বিষয়টি উপস্থাপিত হয়নি। বিষয়টি দর্শকের সামনে উঠে আসার প্রবল প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সেটি হয়নি। সেই হিসেবে একেবারে নতুন বিষয় নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রযোজনাটি। দেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় ঘটনার সাক্ষ্য দেবে এই নাটক। সেই সঙ্গে নাট্যপ্রেমীদের বিষয়নির্ভর ভাল নাটক দেখার আকাক্সক্ষাটিও পূরণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। মেজর নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নূনা আফরোজ, অনন্ত হিরা, আউয়াল রেজা, রওশন জান্নাত রুশনী, সুমন মল্লিক ও বাঁধন সরকার। নাটকটির আলোক পরিকল্পনা করেছেন ঠান্ডু রায়হান। মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন ফয়েজ জহির। সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন রামিজ রাজু। পোশাক পরিকল্পনা করেছেন নূনা আফরোজ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: