ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা মহামারী ॥ ফুল চাষীদের চোখেমুখে বিষণ্নতা

প্রকাশিত: ২০:১৭, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০

করোনা মহামারী ॥ ফুল চাষীদের চোখেমুখে বিষণ্নতা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে নাকাল ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালির চাষীরা। গত বছর তারা কোন ব্যবসা করতে পারেনি। তবে বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বরকে ঘিরে ফুলের ব্যবসা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরলেও চাষীদের মধ্যে আবারও করোনার আতঙ্ক থেকে যাচ্ছে। মূলত বিভিন্ন দিবসের দিকে চেয়ে থাকেন এখানকার ফুল চাষীরা। কিন্তু ভাইরাসের প্রভাবে গত ফেরুয়ারি ও মার্চ মাসে কোন ব্যবসা করতে পারেনি তারা। তার উপর এসে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড় আমফান। তখন চরমভাবে ভেঙে পড়ে ফুল চাষের ওপর নির্র্ভর এলাকার হাজার হাজার মানুষ। বিক্রি না হওয়ায় গরু-ছাগল দিয়ে অনেকে খেতের ফুল খাইয়েছে। দেশের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে যশোর জেলার গদখালীতে ফুল উৎপাদন শুরু করা হয় আশির দশকে। দেশে ফুলের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার রয়েছে এখানে। ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা গদখালিতে আসেন ফুল ক্রয় করতে। ফুল উৎপাদন ও কেনাবেচায় শত শত কোটি টাকার লেনদেন হয় বছরে। যশোর শহর থেকে পশ্চিমের উপজেলা ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার ৭৫ গ্রামের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয় হরেক রকমের ফুল। ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার গ্রামগুলোর রাস্তার দুইপাশে দিগন্ত বিস্তৃত জমিতে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি আর সাদা রঙের ফুলের সমাহার দেখা যায়। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের পানিসারা, হাড়িয়া, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, পটুয়াপাড়া, সৈয়দপাড়া, মাটিকুমড়া, বাইসা, কায়বা, ফুলিয়া আর শার্শার নাভারন, উলাশি, গদখালি ও শ্যামলাগাছি গ্রামের প্রায় প্রতিটি মাঠ এখনও ভরা ফুলে। শত শত হেক্টর জমি নিয়ে গাঁদা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, কসমস, ডেইজ জিপসি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ রয়েছে এখানে। করোনা পরিস্থিতি আসার আগে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠত গদখালির ফুলের বাজার। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সেই দৃশ্য আর নেই। পুরো বাজার এলাকা যেন জনমানব শূন্য। নেই আগের মতো ফুলের দাম নিয়ে হাঁকডাক। চাষীদের চোখে-মুখে বিষণ্নতার ছাপ।
×