ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের অহঙ্কার দিলীপ ভিনসেন্ট গমেজ

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বিজয়ের কথা

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বিজয়ের কথা

ডিসেম্বর মাস। বিজয়ের মাস। আজ হতে ৪৯ বছর পূর্বে এই ডিসেম্বর মাসেই দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ তাজা প্রাণের বিনিময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পশ্চিম পাকিস্তানীরা পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে এবং বিজয় পতাকা পতপত করে উড়ে বাংলার ঘরে ঘরে। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের নিকট ছিল এক বিশেষ উন্মাদনার সময় যা এখনও ভুলে যেতে পারিনি। বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের এক অনন্য ও ঐতিহাসিক নাম ডিসেম্বর মাস। ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। ত্রিশ লাখ তাজা প্রাণের বিনিময়ে দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে পশ্চিমাদের শোষণ, দুঃশাসন, অত্যাচার, নিপীড়ন, হত্যা, অর্থনৈতিক ভেদাভেদ ও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে সেদিন অংশ নিয়েছিল জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে বাংলার কৃষক, জেলে, তাঁতি, দিনমজুর, রিক্সাচালক, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, খেলোয়ার, ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ার, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, গৃহিণী, সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাগণ। মহান মুক্তিযুদ্ধে কিন্তু আমরা সবাই একসঙ্গে মিলেই অংশ নিয়েছি। অনেকে অনেক প্রতিকূলতার কারণে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিতে না পারলেও যার যার অবস্থানে থেকে চেষ্টা করেছে বীর মুক্তিযুদ্ধাদের সার্বিকভাবে সাহায্য সহযোগিতার উদার হাত প্রসারিত করতে এবং তারই ফলশ্রুতিতে মাত্র নয় মাসের রক্তাক্ত যুদ্ধে পশ্চিমারা আমাদের নিকট পরাজিত হয়ে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং আমরা বিজয় লাভ করি। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসার মধ্য দিয়ে আমরা পালন করছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে কারও অবদান কিন্তু কোনভাবেই ছোট করে দেখার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। বাংলার আমজনতা মানুষের আত্মত্যাগ একতা, শক্তি মানসিকতা ও শক্ত মনোবল পশ্চিমা সামরিক শাসকদের পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। ডিসেম্বর মাস মানেই বিজয়ের মাস। আজ আমাদের বসবাস বিজয়ের ৪৯তম বছরে। আর মাত্র এক বছর পর আমরা বাঙালী জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় আনন্দঘন মনে পালন করব মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী। তাই বিজয়ের মাসে আজ নতমস্তকে ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি শুধু যারা দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবেসে নিজ জীবনকে তুচ্ছ করে একদম ভয়হীন সাহসিকতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল হতে মুক্ত করে দেশকে যুদ্ধে জয়ী করে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন সেই সব বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধারাই আমাদের গৌরব ও অহঙ্কার। আসুন, মহান বিজয়ের মাসে আমরা প্রত্যেকে দেশ পতাকা হাতে নিয়ে সম্মিলিতভাবে শপথ নেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আমরা নতুন প্রজন্মকে জানাব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযোগ্য সম্মান জানাব। দেশের মানুষ ও প্রাণপ্রিয় দেশকে নিজের চেয়ে বেশি নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসব এবং সম্মিলিতভাবে দেশকে সোনার বাংলায় গড়তে হাতে হাত রেখে কাজ করব। তেজগাঁও, ঢাকা থেকে
×