ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ

পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে

প্রকাশিত: ২৩:০৪, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে একাত্তরের গণহত্যার দায় স্বীকার করেনি। এখন পর্যন্ত তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। পাকিস্তানকে অবশ্যই এসব নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা না চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের সঙ্গে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। অন্যথায় সমগ্র দেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরও কঠোর কর্মসূচী দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অপরাধে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। সমাবেশ শেষে পাকিস্তান দূতাবাসে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। তবে দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রার শুরুতেই শাহবাগে আটকে দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে মিছিল থেকে ছয় সদস্যের এক প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তান দূতাবাসে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ভাস্কর শিল্পী রাশা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এজেডইউ প্রিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ডিপ্লোম্যাটিক পুলিশের ডিসি আশরাফুল ইসলাম। সমাবেশের বক্তব্যে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, পাকিস্তানকে অবিলম্বে গণহত্যার দায় স্বীকার করে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দূতাবাস এখনও ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। পাকিস্তান দূতাবাসের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের অপরাধে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করব। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেব। সমাবেশে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন বলেন, ১৪ ডিসেম্বর বাঙালী জাতির জীবনে সবচেয়ে বড় কষ্টদায়ক দিন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আজকের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তানদের। প্রথিতযশা লেখক, কবি, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, শিক্ষক, বিজ্ঞানীদের রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। পাকিস্তানী জান্তারা যখন বুঝতে পেরেছিল যে, তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হতে যাচ্ছে ঠিক তখনই জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য এদেশীয় রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের সহযোগিতায় হত্যা করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে গণহত্যা দিয়ে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত ত্রিশ লাখ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী বাহিনী।
×