ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সামুদ্রিক মৎস্য আইন নিয়ে ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই

প্রকাশিত: ২৩:০১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

সামুদ্রিক মৎস্য আইন নিয়ে ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সামুদ্রিক মৎস্য আইন নিয়ে কোনভাবেই ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সোমবার রাজধানীর সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা জানান। এ সময় তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনা সরকার কখনও গণবিরোধী আইন করেনা। কোন যৌক্তিক দাবি থাকলে সরকার সর্বোচ্চ সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে। কোন প্রক্রিয়ায় ভুল বোঝাবুঝি বা সুবিধা-অসুবিধা থাকলে তা সমাধান করা হবে। কিন্তু কোন সমাধানের প্রক্রিয়া অনাকাক্সিক্ষত ভূমিকায় যাতে নষ্ট না হয়ে যায়। সরকার মানুষের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করতে চায়, উদ্ভূত সমস্যা সমাধান করতে চায়। তবে দেশের স্বার্থে, দেশের সম্পদ রক্ষার স্বার্থে অনেক সময় কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোনভাবে আমাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া বা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেটা আমরা দেখব। মৎস্য খাতের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। কৃষির একটি বড় অংশ মৎস্য খাত। এ খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। মৎস্য গবেষণাসহ ব্লুু ইকোনমি কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এমনকি গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ সংগ্রহের জন্য সরকার প্রকল্প নিয়েছে। মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়। আমরা অনেক বড় বড় দেশকে অতিক্রম করে মৎস্য উৎপাদনে ভাল অবস্থানে পৌঁছেছি। কোনভাবেই সামুদ্রিক মৎস্য খাত যেন প্রতিকূল অবস্থায় না পড়ে সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ সময় নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, কেউ বেআইনী কাজ করলে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে আইনের যাতে কোন অপব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে হবে। আইনের বিধি-বিধান দিয়ে কাউকে যেন জিম্মি করা না হয়, কোন অনিয়ম যাতে না হয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে। সম্প্রতি নতুন প্রণীত সামুদ্রিক মৎস্য আইন নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এ্যাসোসিয়েশনের কেউ সম্পৃক্ত নন বলে এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ সভায় জানান। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বিষয়ের জন্য এ সময় তারা দুঃখ প্রকাশ করেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ তৌফিকুল আরিফ, যুগ্ম সচিব মোঃ হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নূরুল কাইয়ুম খান, ১ম ভাইস প্রেসিডেন্ট ভাইস এ্যাডমিরাল (অব) জহির উদ্দিন আহমেদ, মহাসচিব মসিউর রহমান চৌধুরীসহ এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত মাসে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাজার মাত্রা বাড়িয়ে মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যন্সকে বাংলায় নতুন আইন করতে সংসদে বিল পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধা দিলে দুই বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে তিন বছরের জেল এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে মৎস্য আহরণের নৌযানের ক্ষতি করলে ২ বছরের জেল এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে, যা আগে তিন বছরের জেল এবং এক লাখ টাকা জরিমানা ছিল। বিস্ফোরক ব্যবহার করে, হতচেতন বা অক্ষম করে মাছ ধরলে তিন বছরের জেল বা এক কোটি টাকা দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল। বেআইনী ধরা মাছ সংরক্ষণ, মজুদ বা বিক্রি করলে ২ বছরের জেল এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
×