ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যৌতুক মামলা থেকে বাঁচতে মাদক মামলা দিয়ে হয়রানি

প্রকাশিত: ২২:১৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০

যৌতুক মামলা থেকে বাঁচতে মাদক মামলা দিয়ে হয়রানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ১৩ ডিসেম্বর ॥ স্ত্রী শামছুন্নাহার বেগম তারার দায়ের করা যৌতুকের মামলা থেকে রক্ষা পেতে হাওয়াই মিঠাইয়ের ভেতর সুকৌশলে ইয়াবা দিয়ে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে স্বামী জিহাদুল ইসলাম জনি। রবিবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের নশরতপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে শামছুন্নাহার বেগম তারা। তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এর প্রতিকার ও দোষী জিহাদুল ইসলাম জনির শাস্তি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হয়রানির শিকার অসহায় শামছুন্নাহার উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ২ মে পরিচয়ের সূত্র ধরে পারিবারিকভাবে গাইবান্ধা পৌর এলাকার পলাশপাড়ার বাবু মিয়ার পুত্র জিহাদুল ইসলাম জনির সঙ্গে যৌতুক না নেয়ার শর্তে ৪ লাখ টাকা দেনমোহরে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী জনি ৪ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এতে অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। উপরন্তু জনি যৌতুক না পেলে তারার সঙ্গে সংসার করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ঢাকার সাভারের চীফ জুডিসিয়াল ও আমলী আদালতে শামছুন্নাহার তারা বাদী হয়ে যৌতুক মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়ের করার পর তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নানাভাবে হুমকি দেয় এবং একপর্যায়ে তার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ নিয়ে শামছুন্নাহারের মা সদর থানায় একটি জিডি করেন। কিন্তু মামলা মীমাংসার কথা বলে এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি জনি তাকে গাইবান্ধা শহরে ডেকে নেয়। এ সময় জনি পৌরপার্কে সুকৌশলে হাওয়াই মিঠাইয়ের ভেতর ইয়াবা রেখে তা শামছুন্নাহার বেগম তারার হাতে ধরিয়ে দিয়ে সটকে পড়ে। পরে ডিবি পুলিশ তাকে ৩ পিস ইয়াবাসহ আটক করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মাদক মামলায় তিনি এক মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শামছুন্নাহার বেগম আরও বলেন, জামিন নিয়ে ফিরে আসার পর পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা তাকে জানায়, তার স্বামী জনি, তার প্রথম স্ত্রী মনিষা বেগম, তার বোন হাসনা বেগম ও তার স্বামী মিলন মিয়া, শ্যালক পিন্টু মিয়া মিলে তাকে কৌশলে ইয়াবা দিয়ে মামলায় ফাঁসিয়েছে। তিনি বলেন, তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে শামছুন্নাহার বেগম তারার অসহায় মা নুরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।
×