ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী

ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যেখানে কথা বলবে সেখানেই প্রতিরোধ

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১২ ডিসেম্বর ২০২০

ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যেখানে কথা বলবে সেখানেই প্রতিরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রামে-গঞ্জে যেখানেই মৌলবাদীরা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলবে সেখানেই প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। অপরদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের শাস্তিসহ ৬ দফা দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম’ সংগঠন। এছাড়া রাজধানীর ফার্মগেটে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, উগ্র মৌলবাদ এবং সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত মুজিববর্ষ-২০২০ ও চলমান রাজনীতি বিষয়ক আলোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় তিনি বলেন, নিজেদের শক্তি দিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু একাডেমির উপদেষ্টা লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অরুণ সরকার রানা, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম, মিনহাজুল উদ্দিন মিন্টু, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, সমীরণ রায় বক্তব্য রাখেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে এত ভয় কেন? সব জায়গায় ভাস্কর্য আছে। সেই সম্রাট শাহজাহান, সিরাজ-উদ-দৌলার ভাস্কর্য রয়েছে। মুসলিম দেশগুলোতেও ভাস্কর্য আছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যতই দেরি হচ্ছে ততই স্বাধীনতাবিরোধীরা মনে করছে- একদিকে শেখ হাসিনার পদ্মা সেতুর মতো উন্নয়ন আবার আরেকদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে যাচ্ছে; তাহলে আমাদের (স্বাধীনতাবিরোধী) স্থানটি কোথায়? সেই আতঙ্কেই তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করছে এবং ভাস্কর্য স্থাপন করতে দিচ্ছে না। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমি অনুরোধ করব, আপনাদের সকল সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সচেষ্ট হোন। এবার আমি দেখেছি কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে হাত দেয়ার ফলে গ্রাম-গঞ্জে, প্রতিটি উপজেলায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষ বিশাল বিশাল মিছিল, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেছে। এটা ভাল লক্ষণ বটে। তবে এটাকে আরও জোরদার করতে হবে। আর খালি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে থাকলে হবে না। এদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের শাস্তিসহ ৬ দফা দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম’ নামে একটি সংগঠন। এ সময় সংগঠনটির অর্ধশতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আঘাত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত করা হয়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এই আঘাতের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেব। আপনারা জানেন প্রতিনিয়ত একটি চক্র মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। মানববন্ধনে সংগঠনটির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম তুষার ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। অপরদিকে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, উগ্র মৌলবাদ এবং সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বিকেলে ফার্মগেটের তেজগাঁও কলেজের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তেজগাঁও কলেজের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ হয়ে সংসদের পূর্বপাশ ঘুরে আবার সেখানে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশে অপরাজনীতি শুরু করেছে। তারা দেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে চায়। তাদের ওই অপতৎপরতা কোনদিনই বাস্তবায়ন হবে না। তার আগেই বাংলার মাটি থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের উৎখাত করা হবে। সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উওরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু, ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হাসান সোহেল, ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহসভাপতি মাসুদ হোসেন সুমন, তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রবিন, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম তাজিমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অঙ্গসংঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
×