ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

‘আমার জন্য বড় প্রাপ্তি’

প্রকাশিত: ০১:৩৪, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

‘আমার জন্য বড় প্রাপ্তি’

বেহেশতের ফুলের নামে নাম সুনেরা, পুরো নাম সুনেরাহ বিনতে কামাল। অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে বড় পর্দায় কাজ করার স্বপ্নে বিভোর সুনেরাহ! এরই মধ্যে তার স্বপ্ন পূরণও হয়েছে। অভিষেক সিনেমা দিয়েই অর্জন করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘ন ডরাই’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয় তাকে এনে দিয়েছে এমন সাফল্য। তবে সহজ ছিল না তার পথচলা। ধাপে ধাপে নিজেকে তৈরি করেছেন তিনি। টানা নয় বছর করেছেন মডেলিং, পরিশ্রমে সাফল্যও এসেছে। সুনেরার শুরুটা নাচ দিয়ে। মাত্র আড়াই বছর বয়সে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে (বাফা) নাচ শেখা শুরু করেন। শিখেছেন গানও। স্কুলে থাকতে থিয়েটারে অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তখন বাস্কেটবল ও ভলিবল ছিল তার পছন্দের খেলা। বিটিভির তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী ছিলেন সুনেরাহ। সেখান থেকে এক পরিচিত জনের মাধ্যমে র‌্যাম্পে পথচলা শুরু। তখন তিনি নবম শ্রেণিতে পড়তেন। র‌্যাম্পে তার নজরকাড়া পারফরমেন্সের জন্য দেশের একটি বড় ফ্যাশন হাউসের ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর হিসেবে সুযোগ পান এই তরুণী। দাপিয়ে কাজ করেন ফ্যাশন দুনিয়ায়। ডানপিটে বলতে যা বোঝায় সবটাই ছিল সুনেরার মধ্যে। গত বছর স্টার সিনেপ্লেক্স প্রযোজিত ও তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ‘ন ডরাই’ সিনেমায় একজন সার্ফারের চরিত্রে উপস্থিত হয়ে সবার প্রশংসা পান তিনি। এবার এই সিনেমায় অভিনয় করে ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন সুনেরাহ। সার্ফারের চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জও নিতে হয়। চট্টগ্রামের ভাষাও তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে শিখতে হয়। পুরো বিষয়টি রপ্ত করতে হয় স্বল্প সময়ের মধ্যে। কাজের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা থাকলে যে কোন মানুষই অর্জন করতে পারে সাফল্য যার প্রমাণ সুনেরাহ বিনতে কামাল। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন, অনুভূতি কেমন? আনন্দকণ্ঠকে সুনেরাহ বলেন, এটি আমার জন্য বড় প্রাপ্তি। ‘ন ডরাই’ কয়েকটি বিভাগে বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছে তাই ভাল লাগাটা একটু বেশিই। কষ্টটি সার্থক হয়েছে। তবে কাজটি করার আগে কল্পনাও করিনি এ রকম একটি অর্জন আসবে। পুরস্কার পাব সেই ভাবনা থেকে কাজটি করিনি। যখন যে কাজটি করি মন থেকে নিজের সেরাটা দিয়ে করি। প্রথম ছবি হিসেবে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। সবারই স্বপ্ন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের। কিন্তু আমি জানতাম না প্রথম ছবিতেই পুরস্কার আসবে। ছবি মুক্তির পর প্রশংসা এবং জাতীয় চলচ্চিত্রের জন্য নমিনেশন এটিই বড় প্রাপ্তি ছিল। যখন জানলাম আমি পুরস্কার পাচ্ছি সে আনন্দ বোঝাতে পারব না। শূটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? শূটিং অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। শূটিংয়ের সময় আবহ অনুকূলে ছিল না। তা ছাড়া চরিত্রটি ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং। শহরের একটি মেয়ে থেকে নিজেকে চট্টগ্রামের একজন লোকাল মেয়ে হিসেবে তৈরি করা, চট্টগ্রামের ভাষা শেখা পুরো ছবিটিই চ্যালেঞ্জ নিয়ে করতে হয়। ছয় মাস লেগেছে নিজেকে তৈরি করতে। প্রথম ছবির সাফল্যর পর বুঝে শুনে চলতে চান সুনেরা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পর দায়িত্ববোধ বেড়ে গেছ বলে জানান। চিন্তা-ভাবনা করেই আগাতে চান। সব ধরনের ছবিতে কাজ করতে চান তিনি। তবে গল্প ও চরিত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে অভিনয়ের সুযোগ থাকবে সেখানেই দেখা যাবে। সেটা নাটক, ওয়েব কনটেন্ট যাই হোক না কেন সব মাধ্যমে কাজ করতে চান। সুনেরার ভাষায় বর্তমান চলচ্চিত্র বেশ ভাল হচ্ছে। করোনার কারণে চলচ্চিত্রের বেশ ক্ষতি হয়েছে যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সবাই। সামনে ভাল কিছু হবে এমন আশা ব্যক্ত করেন সুনেরা। পছন্দের অভিনেতা মোশাররফ করিম। কখনও সুযোগ হলে তার বিপরীতে কাজ করবেন। ভাল কাজ হলে তাকে মাঝে মাঝে নাটকে দেখা যাবে। যদিও গত বছর একটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পছন্দের অভিনেত্রী জয়া আহসান। নায়ক হিসেবে ভাল লাগে শরিফুল রাজকে। শরিফুলের চলচ্চিত্রে সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি।
×