ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তিন গুণী স্মরণে শিশু চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ৭ ডিসেম্বর ২০২০

তিন গুণী স্মরণে শিশু চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তারা তিন ভুবনের তিন বাসিন্দা। একজন বিখ্যাত চিত্রকর ও দেশের চারুকলা আন্দোলনের পথিকৃৎ। দ্বিতীয়জনের কবিতা লিখে ধারণ করেছেন কিংবদন্তির কবির পরিচয়। তৃতীয়জন প্রখাত শিক্ষাবিদের পরিচয় ছাপিয়ে বিজ্ঞান লেখক হিসেবে অর্জন করেছেন ইউনেস্কো কলিঙ্গ পুরস্কার। এই তিন কীর্তিমান হলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কবি ও কথাশিল্পী জসীম উদ্্দীন এবং বিজ্ঞান লেখক আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর জয়নুল আবেদিনের জন্মদিন এবং আগামী ১ জানুয়ারি জসীম উদ্্দীন ও আল মুতীর জন্মদিন। আর জন্মবার্ষিকীতে এই তিন গুণীকে একসঙ্গে স্মরণ করবে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা। মেলার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে অনুষ্ঠিত হবে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও বিজ্ঞানবিষয়ক বক্তৃতা প্রতিযোগিতা। প্রতিবছর ঘটা করে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলেও মহামারীর কারণে এবার প্রতিযোগিতাগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনলাইনে। ইতোমধ্যে সারাদেশের পাঁচ হাজার প্রতিযোগী চিত্রকর্মের ছবি, আবৃত্তি ও বিজ্ঞানবিষয়ক বক্তৃতার ভিডিও কচি-কাঁচার ইমেইলে পাঠিয়েছে। বিচারকদের যাচাই-বাছাই শেষে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তিন বিভাগের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আর পরিস্থিতির অবনতি হলে অনলাইনেই বিজয়ীদের নাম ঘোষণাসহ তাদের কাছে পুরস্কার পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলপনা চৌধুরী । এ বিষয়ে কচি-কাঁচার মেলার সাধারণ সম্পাদক আলপনা চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, ১৯৫৬ সালের ৫ অক্টোবর কবি সুফিয়া কামালের তারাবাগের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক সভার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় কঁচি-কাচার মেলা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মুতী। আর জয়নুল আবেদিনের হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মেলার চিত্রাঙ্কন বিভাগ। তিনি নিজেই শিশুদের ছবি আঁকা শেখাতেন। অন্যদিকে মেলার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জসীম উদ্্দীনও রেখেছেন অসামান্য অবদান। সেই সুবাদে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা তিন প্রতিষ্ঠাতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে। প্রতিবছর তাদের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে আড়ম্বরপূর্ণভাবে সরকারী এই আয়োজন করা হয়। তবে মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় এবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিযোগিতা। তারপরও ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সারাদেশের পাঁচ হাজারের বেশি প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছে প্রতিযোগিতায়। শিশুদের সৃজনশীলতা বিকাশের এ আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণ করা হবে তিন গুণীকে। দুই থেকে আঠারো বছর বয়সী শিশু-কিশোররা অংশ নিচ্ছে প্রতিযোগিতায়। তিনটি বিভাগে সাজানো হয়েছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। দুই থেকে আট বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে গঠিত ক বিভাগের প্রতিযোগিতার বিষয় হবে উন্মুক্ত। একইভাবে আটের অধিক থেকে বারো বছর বয়সী শিশুদের গঠিত খ বিভাগের প্রতিযোগীরা যে কোন বিষয়ে ছবি আঁকতে পারবে। বারো বছরের অধিক থেকে আঠারো বছর বয়সীকে নিয়ে গঠিত গ বিভাগের প্রতিযোগীদেরও বিষয় উন্মুক্ত। একইভাবে আবৃত্তি বিষয়েও তিনটি বিভাগে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। তিন থেকে আট বছর বয়সীদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ক বিভাগ, আটের অধিক থেকে ১২ বছর পর্যন্ত খ বিভাগ এবং বারোর অধিক থেকে ১৮ বছর বয়সীরা অংশ নিচ্ছে গ বিভাগে। প্রতিটি বিভাগের প্রতিযোগীরাই জসীম উদ্্দীন রচিত যে কোন কবিতা আবৃত্তি করতে পারবেন। বিজ্ঞানবিষয়ক বক্তৃতা প্রতিযোগিতাও ক, খ ও গ বিভাগে সাজানো হয়েছে। সাত থেকে ১০ বছর বয়সীদের নিয়ে গঠিত ক বিভাগের প্রতিযোগীদের বক্তৃতার বিষয় ‘আমি কী করে পরিচ্ছন্ন থাকি’। দশের অধিক থেকে ১৪ বছর বয়সীদের নিয়ে গঠিত খ বিভাগের বক্তৃতার বিষয় ‘আর নয় ফার্স্ট ফুড’। চৌদ্দর অধিক থেকে ১৮ বছর বয়সীদের গ বিভাগের প্রতিযোগিতার বিষয় ‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশে শিক্ষার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার’।
×