ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভেটো প্রদানের হুমকি ফ্রান্সের ॥ বরিস-লিয়েন আলোচনায় বসছেন

ব্রেক্সিট বাণিজ্য আলোচনা স্থবির

প্রকাশিত: ০০:২৫, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

ব্রেক্সিট বাণিজ্য আলোচনা স্থবির

ব্রেক্সিট বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে অচলাবস্থা কাটছেই না। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন আলোচনায় বসছেন। লন্ডনে সপ্তাহব্যাপী আলোচনায় কোন ফল না আসায় খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইইউ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় সম্মত হন। খবর আলজাজিরা ও স্কাই নিউজ অনলাইনের। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ ‘ব্রেক্সিট’ নামে পরিচিত। এক সপ্তাহের নিবিড় আলোচনার পরও ‘উল্লেখযোগ্য ভিন্নতা’ থাকার কারণে উভয়পক্ষের আলোচকরা আলোচনার জন্য দুই নেতাকে আহ্বান জানান। যুক্তরাজ্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য বিধিমালা মানবে। তাই চুক্তি করার জন্য সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। ব্রেক্সিট নিয়ে বেশিরভাগ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, তবে মূল কিছু বিষয় রয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মৎস্য আহরণ, ব্যবসায়ের জন্য রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি পরিচালনা করার নিয়ম এবং কীভাবে চুক্তিটি কার্যকর করা হবে সে সবের সমাধান হয়নি। যুক্তরাজ্যের পক্ষের এক আলোচক বলেছেন, চুক্তি নিয়ে এ সপ্তাহের শুরুতে ইতিবাচক দিক দেখা গিয়েছিল। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে ১০ বছর যুক্তরাজ্যের জলসীমায় থাকতে দেয়ার দাবিটি পথ বদলে দিয়েছে। ফ্রান্সের ইউরোপবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা চুক্তিতে সন্তুষ্ট না হলে ভেটো দেবেন। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ তার দেশের মৎস্যশিল্প যাতে ব্রিটিশ জলসীমায় যথাযথ সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে চান। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেছেন, একটি বাণিজ্য চুক্তিতে একমত হওয়ার ব্যাপারে তিনি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। ১০ ডাউনিং স্ট্রীট সূত্র মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছার যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে। তবে ব্রেক্সিট বিষয়ে ইইউর সমন্বয়করা সহজ সমাধানের পথ বেছে নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তাদের নতুন দাবি ও অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ের প্রয়াস চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যদি তারা কোন চুক্তিতে সম্মত না হন, তবে উভয়পক্ষ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মে বাণিজ্য করবে। যার অর্থ দাঁড়ায়, আমদানি ও রফতানিতে শুল্ক প্রবর্তন হবে। আলোচনা কি আরও খারাপের দিকে মোড় নিয়েছে? ব্রেক্সিটের পরে কী ঘটবে? লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কী তৈরি হয়নি? এমন প্রশ্ন ও দুর্ভাবনা উভয়পক্ষের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আলোচনায় এক ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হলেও কথাবার্তা চলছে। তবে শনিবার স্থানীয় সময় রাতে বরিস-লিয়েন বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা নেই বলেই ধরে নেয়া হয়েছে। প্রধান সমন্বয়ক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্রাসেলসে পরিকল্পিত প্রত্যাবর্তন বাতিল করেছেন। ইউরোপীয় কমিশনের হেড অব টাস্কফোর্স ফর রিলেশন্স উইথ দ্য ইউনাইটেড কিংডম মিশেল বার্নিয়ার গত শনিবার লন্ডনে পৌঁছান। বুধবার পর্যন্ত আলোচনা শেষে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য ইংলিশ চ্যানেলের বন্দর সংক্রান্ত চুক্তির মাত্র চার সপ্তাহ বাকি থাকতেই একটি নতুন ‘সঙ্কট’ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এসবের কারণে ব্রিটেনের প্রতি তিনি আস্থা হারাচ্ছেন। ইইউর ২৭ দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় বার্নিয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, ব্রিটেনের কিছু পদক্ষেপ বিশ্বাসের বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সকল সদস্য দেশ এবং ইউরোপীয় সংসদে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের আগে এই চুক্তি অনুমোদন করতে হবে।
×