ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বীর মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ

বগুড়ায় বিতর্কিত ব্যক্তি যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি

প্রকাশিত: ২০:০১, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

বগুড়ায় বিতর্কিত ব্যক্তি যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বীর মুক্তিযোদ্ধা নন (!) এমন এক বিতর্কিত ব্যক্তি বগুড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি বিষয়টি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বগুড়ার জেলা প্রশাসককে আদেশ দেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দায়িত্ব দেন। মন্ত্রীর কাছে যে অভিযোগ দেয়া হয় তাতে দেখা যায়, বগুড়ার যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম (ঝন্টু) অন্য জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধার এফ এফ নম্বর ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যার নামের এফ এফ নম্বর ব্যবহার করেছেন তিনি হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শন্তু নাথ পাণ্ডে (ভারতীয় তালিকা নম্বর ৬৪৭০)। বাবার নাম বিশ্বেশ্বর পাণ্ডে। বাড়ি মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলায়। ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, ৭ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের প্রকৃত তালিকায় আমিনুল ইসলাম (ঝন্টু) নাম নেই। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক প্রদেয় নামের তালিকাতেও অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম (ঝন্টু) নাম নেই। তারপরও ওই ব্যক্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। বগুড়ার কয়েক বীর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম ঝন্টুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে তা তার জানা নেই। সরকারীভাবে তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই কমিটির সদস্য সচিব বগুড়া সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। বিষয়টি নিয়ে সদরের ইউএনও আজিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে জানান-বিষয়টি ইন্টারনাল। ইন্টারনালি তদন্ত হয়ে জেলা প্রশাসককের কাছে রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। এরচেয়ে বেশি কিছু বলার সময় আসেনি। আরেকটি সূত্র জানায়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশ ছাড়া যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেসামরিক গেজেটভুক্ত হয়েছে তাদের সনদ যাচাই বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট সদরুল আনাম রঞ্জু (যিনি মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন) জানান, যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম (ঝন্টু) অন্য জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বগুড়া জেলায় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছেন। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে লাল মুক্তিবার্তাধারী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাইয়ের স্থানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। অন্যদিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বগুড়া সদরের কমান্ডার আব্দুল কাদেরের কাছে প্রেরিত এক চিঠিতে জানিয়েছে, ট্রাস্টে রক্ষিত ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বগুড়া সদরের ১২ জনের নাম লিপিবদ্ধ নেই। এই বিষয়ে বগুড়ার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, ওই ব্যক্তিরা বীর মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সরকার কর্তৃক প্রদেয় সম্মানী ভাতাসহ সকল সুযোগসুবিধা পেয়ে আসছে। তিনি বিষয়গুলো তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন।
×