ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উৎপাদন হবে জ্বালানি

সিরাজগঞ্জে পৌর বর্জ্য অপসারণ ও শোধন প্রকল্প

প্রকাশিত: ২০:০০, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

সিরাজগঞ্জে পৌর বর্জ্য অপসারণ ও শোধন প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ সিরাজগঞ্জ পৌরসভা হবে ক্লিন সিটি, গ্রীন সিটি। পৌর বর্জ্য অপসারণ ও শোধন করে নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও উন্নত পরিবেশ উপহার দিতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ‘পৌর বর্জ্য বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জ্বালানি উৎপাদন’ প্রকল্প নামের এই বর্জ্য শোধন করবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্কলার পাওয়ার লিমিটেডের কারিগরি সহায়তায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান এনডিউরিং এনার্জি বাংলাদেশ। এই বর্জ্য থেকে উৎপাদিত জ্বালানি তেল ইটভাঁটিতে কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা যাবে। এতে কয়লা আমদানি খাতে বৈদেশিক অর্থ সাশ্রয় হবে। এটি বেসরকারী পর্যায়ের বাংলাদেশে প্রথম পাইলট প্রকল্প। গত ২ নবেম্বর অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। সাড়ে ২৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সিরাজগঞ্জ পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ। আয়তনের তুলনায় ঘনবসতিপূর্ণ এ পৌরসভায় প্রতিদিন গড়ে এক শ’ টন বিভিন্ন রকমের বর্জ্য পদার্থ জমে। এ সব বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে অপসারণ বা শোধন করে ব্যবহারের কোন পরিকল্পনা ছিল না। পৌর এলাকার শহরভিত্তিক প্রতিটি সড়কে ডাস্টবিনে বর্জ্য ফেলছে নাগরিকরা। মূল শহরের বাইরে শহরতলীতে বর্জ্য ফেলা বা জমিয়ে রাখার কোন ব্যবস্থাই নেই। শহরভিত্তিক ডাস্টবিন থেকে পৌরসভার গার্বেজ ট্রাকে ময়লা আবর্জনা বর্জ্য পদার্থ প্রতিদিন তুলে নিয়ে শহরতলীর ভাগাড়ে কিংবা সড়ক পাশে ফেলা হতো। এতে নাগরিক যন্ত্রণা ছাড়াও দুর্গন্ধময় পরিবেশে চলাচল কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তাছাড়াও পরিবেশ বিনষ্ট এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা দারুণভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ পৌরসভা ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান এনডিউরিং এনার্জি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পৌরসভার এই বর্জ্য শহরের পাঁচটি পয়েন্ট গার্বেজ ট্রাকে এনে জমিয়ে রাখা হবে। পরে তা তুলে নিয়ে প্রকল্প এলাকা শহরতলীর রামগাতিতে নিজস্ব পয়েন্টে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। প্রতিদিন প্লান্টে বর্জ্য পদার্থের চাহিদা হবে তিন শ’ মে.টন। সিরাজগঞ্জ পৌরসভা থেকে প্রতিদিন বর্জ্য পাওয়া যাবে গড়ে একশ’ টন। বাকি দুশ’ টন আসবে জেলার অন্য পৌরসভা থেকে। প্রয়োজনে জেলার বাইরের পাবনা এবং নাটোরের বিভিন্ন পৌরসভা থেকেও তা সংগ্রহ করা হবে। সংগৃহীত এ সব বর্জ্য পদার্থ ‘পৌর বর্জ্য বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জ্বালানি উৎপাদন প্রকল্পে ব্যবহার করে সলিড রিকভারড ফুয়েল উৎপাদন করা হবে। বেসরকারী সংস্থা এনডিউরিং এনার্জি এ বিষয়ে একটি সমীক্ষা করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, পৌর বর্জ্য অপসারণের জন্য পৌর নাগরিকরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং উন্নত পরিবেশ নাগরিকদের কামনা ছিল। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পৌরমেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জনসেবা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। পৌর এলাকায় সড়ক ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করে নাগরিক সুবিধা দেয়া হয়েছে। প্রথম শ্রেণীর এই পৌরসভাকে জঞ্জালমুক্ত করে পৌর নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপনের লক্ষ্যে ‘পৌর বর্জ্য বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জ্বালানি উৎপাদন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রায় ১৩০ বছরের এই পৌরসভায় প্রথম এ ধরনের প্রকল্প এই প্রথম বাস্তবায়ন হচ্ছে।’
×