নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থানার ৩নং বিট নূরপুর ইউনিয়নের সুতাং বাজারে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক, জুয়া, বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌতুক, দাঙ্গা, জঙ্গীবাদ, প্রযুক্তির অপব্যবহার, ইত্যাদির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ পর্য়ন্ত সুতাং বাজারে শায়েস্তাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম পিপিএম-সেবা। এ সভায় ওসি (তদন্ত) গোলাম দস্তগীর আহমদসহ এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম পিপিএম-সেবা বলেন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। কেননা চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই যারা করে তারা মানুষ, তারা আমাদের আশেপাশে বসবাস করে। তাই তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সেজন্য নিজ নিজ এলাকায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি করুন। আপনাদের মানব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় কিশোর ও তরুণ বয়স। এ সময়েই নির্ধারিত হয় একজন মানুষের ভবিষ্যৎ। নিজেকে যে নিয়ন্ত্রণ করে ভালো কাজের দিকে জীবনকে ধাবিত করতে পারে, তার ভবিষ্যৎ হয় উজ্জ্বল। আর যে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তার জীবন নিমজ্জিত হয় অন্ধকারে। কিশোর ও তরুণরা সঙ্গদোষে হোক বা অন্য কোনো কারণে হোক, ধূমপান থেকে নেশা শুরু করলেও মাদকের প্রতি ধীরে ধীরে আসক্ত হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে তরুণ প্রজন্ম, যাদের গড় বয়স ১৮ থেকে ৩২ বছর। মাদকের আগ্রাসন বন্ধ করতে না পারলে তরুণ সমাজ এক ভয়াবহ সর্বনাশার কবলে প্রতিত হবে। যার প্রভাব শুধু মাদকসেবী নয়; যা সমাজ, রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ব্যাহত এবং বিভিন্ন অপরাধ সৃষ্টির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সেজন্য আমাদের দেশে বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তির কার্যক্রম চলছে। আর সেটাকে পুঁজি করে একদল কুচক্রী মহল এই প্রযুক্তিকে অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য বিভিন্ন চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তরুণ ছেলেরা এদিকে বেশি ধাবিত হচ্ছে। তাই সকলের সন্তান, ভাই, বন্ধু, আত্মীয় স্বজন, কোথায় যায় না যায় ইত্যাদি বিষয়ে নজরদারিতে রাখতে হবে। নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে আমাদের জনসচেতনতা প্রয়োজন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি মাদ্রাসায়ও ধর্ষণসহ নানা কায়দায় চলছে নারী নির্যাতন। শিক্ষকতার মহান দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিও নাম লেখাচ্ছেন ধর্ষকের খাতায়।
মানুষের আস্থার জায়গা বলে কিছু থাকছে না। পবিত্র শিক্ষাঙ্গন আজ অপবিত্র। নিজের ঠিকানা, নিজের ঘর পর্যন্ত কলুষিত। ধর্ষণ-নির্যাতন মহামারীর রূপ নিয়েছে। যেকোনো মূল্যে এ অবস্থা থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে হবে, বাঁচাতে হবে জাতিকে। কারো একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। তাই সবাই মিলে নিতে হবে সমন্বিত ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: