ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে রিকশাভ্যানচালক শিশু শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২০:০৮, ২ ডিসেম্বর ২০২০

জামালপুরে রিকশাভ্যানচালক শিশু শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের রিকশা ভ্যানচালক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পা খাতুনের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা এলে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিন শম্পাদের বাড়িতে যান। পরে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশক্রমে শম্পার পরিবারের থাকার জন্য একটি পাকাঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনায় মোনাজাত করা হয়। পরে শম্পার বাবা শফিকুল ইসলাম ভাসানীর পায়ের পঙ্গুত্ব চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়। এ সময় জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিশু শম্পা ও তার পরিবারের জন্য বাসস্থান, তার বাবার চিকিৎসা যাবতীয় ব্যবস্থা এবং পরিবারের ভরণ-পোষণ করার ব্যবস্থার দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি শম্পার বাবা শফিকুল ইসলামকে তার পায়ের চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, জামালপুরের নাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পা তার বাবার পায়ের চিকিৎসার জন্য প্রায় দেড় বছর ধরে রিকশাভ্যান চালিয়ে টাকা রোজগার করে আসছিল। সম্প্রতি শম্পার এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সংবাদটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দৃষ্টিতে আসে। পরে সেখান থেকে নির্দেশনা পেয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠান। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী শম্পার বাবার চিকিৎসা, শম্পার পড়ালেখাসহ পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করে তুলতে যা যা প্রয়োজন তা করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। উল্লেখ্য, নাকাটি গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে ভাসানীর দুই মেয়ের মধ্যে ছোট হল শম্পা। কয়েক বছর আগে বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। শফিকুল আগে রিকশাভ্যান চালাতেন। পাঁচ বছর আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি দুর্ঘটনায় তার এক পা ভেঙে যায়। পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। চিকিৎসা করাতে তার সবকিছু বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব। এ পরিস্থিতিতে দেড় বছর ধরে বাবার ওষুধের টাকা আর সংসারের খরচ মেটাতে রিকশাভ্যান চালানো শুরু করে ছোট্ট শিশু শম্পা। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পাওয়ায় শম্পাকে আর রিকশাভ্যান চালাতে হবে না। প্রধামন্ত্রীর সহায়তা পাওয়া দরিদ্র শফিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।
×