ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোট দুর্ঘটনার ৫৫ দশমিক ০৮ ভাগ গাড়ি চাপায়

নবেম্বরে ৪৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন নিহত ও ৭৭৪ জন আহত ॥ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ২ ডিসেম্বর ২০২০

নবেম্বরে ৪৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন নিহত ও ৭৭৪ জন আহত ॥ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবেম্বর মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৪৪৩টি দুর্ঘটনায় ৪৮৬জন নিহত ও ৭৪১জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৫২জন নিহত ও ১৩জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ছয়টি দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও ২০জন আহত এবং চারজন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন নিহত ও ৭৭৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এইমাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২০৩জন চালক, ১৫৫জন পথচারী, ৯৪জন নারী, ৪৯জন শিশু, ৪২জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৩জন শিক্ষার্থী, ১৬জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১০জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে একজন আনসার ও ৯ জন পুলিশসদস্য, ৮জন শিক্ষক, ৫জন বিচারক, ৩জন চিকিৎসক এবং ৩জন সাংবাদিকের পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ১৫৭জন চালক, ১৩৯জন পথচারী, ৭২জন নারী, ৩২জন শিশু, ২৫জন পরিবহন শ্রমিক, ২৫জন ছাত্র-ছাত্রী, ১৪জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ০৮জন শিক্ষক, ০৩জন চিকিৎসক, ০৫জন পুলিশ ও ০১জন আনসারবাহিনীর সদস্য। এইমাসে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান, ২৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ বাস, ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক এবং ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এ মাসে একদিনে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১৯ নবেম্বর। এ দিন ২০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮জন নিহত ২৩জন আহত হয়। একদিনে সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ২৩ নব ম্বর, এইদিনে ৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮জন নিহত ১৪জন আহত হয়। মোট দুর্ঘটনার ৫৫ দশমিক ০৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ খাদে পড়ে, ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ বিবিধ কারনে, ০ দশমিক ৯০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০ দশমিক ২৩ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এইমাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ০১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ৯০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করে, অভারটেকিং এবং বেপরোয়া গতির ফলে এবং সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহীতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। সরকারের আন্তরিকতা ও বিগত নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গিকার থাকলেও বর্তমান সরকারের দুটি বাজেটে তার কোন প্রতিফলন ঘটেনি। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যতি রেখে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
×