ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তে বিশ্বরেকর্ড

প্রকাশিত: ২২:২৩, ১ ডিসেম্বর ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তে বিশ্বরেকর্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক করোনা আক্রান্তের বিশ্বরেকর্ড হলো। মহামারী করোনায় হংকংয়ে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে। এছাড়া ভারতে নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যু কমেছে। যদিও সোমবার পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৬ কোটি ৩১ লাখ ৭২ হাজার ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ১০১ জন। সুস্থ হয়েছে চার কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ৭৯৯ জন। এখনও চিকিৎসাধীন আছে এক কোটি ৮০ লাখ ২২ হাজার ১২৩ জন। যাদের মধ্যে এক লাখ ৫ হাজার ১৯৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ লাখ দুই হাজার ২৫০ জন। একদিনে মারা গেছে ৭ হাজার ৩০৫ জন। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, রয়টার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ওয়ার্ল্ডোমিটারের। হংকংয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ১১৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত চার মাসের মধ্যে সেখানে দৈনিক শনাক্তের হিসাবে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ১০৯ জনই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। যার অর্থ হংকংয়ে আবার এ রোগের বিস্তার ঘটছে। গত শনিবার হংকংয়ে নতুন শনাক্ত ছিল ৮৪ জন। তার আগে গত ১ আগস্ট সেখানে ১২৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর এ বছর জানুয়ারি থেকে হংকংয়ে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ২৩৯ হন কোভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ১০৯ জন। সংক্রমণ আবার বাড়াতে থাকায় গত বৃহস্পতিবার থেকে হংকংয়ে বার, নাইটক্লাব ও অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ বছর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো হংকং সরকার ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করল। যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের বিশ্বরেকর্ড ॥ একদিনে দুই লাখের বেশি মানুষের কোভিড-১৯ সংক্রমিত মানুষ শনাক্ত হওয়ার পর মহামারী করোনায় দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড ভেঙ্গেছে ভাইরাসটির প্রকোপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ২৪ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ কোটি ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ২৮২জনে। আক্রান্তের সঙ্গে মৃত্যুও বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির করোনা সেন্টার জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫৮ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহে আরও ৬০ হাজার মৃত্যুর শঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন সংক্রমণ বড় শহরগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন ক্রমে গ্রামীণ এলাকা এবং দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিস্তার ছড়াচ্ছে করোনা। ফলে আক্রান্তের সংখ্যাও ফের বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে উৎসবের মৌসুমের মধ্যে আগামী তিন সপ্তাহে আরও ৬০ হাজার মার্কিনী করোনায় প্রাণ হারাবেন বলে এক পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি। গত শুক্রবার থ্যাংকসগিভিং ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উৎসব ও ছুটির মৌসুম শুরু হয়েছে। মানুষ ব্যাপকহারে কেনাকাটা করছেন। ফলে ভাইরাসটির সংক্রমণের বিস্তার আরও দ্রুত ছড়াতে পারে বলেই শঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড আক্রান্তের সঙ্গে হাসপাতালে রোগী ভর্তিতেও রেকর্ড হয়েছে। রেকর্ড সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে অর্ধেকের বেশি অঙ্গরাজ্যে। সাউথ ডাকোটা, নেব্রাস্কা, কানসাস, উইসকনসিনে পরিস্থিতি ক্রমে ভয়াবহ হচ্ছে। হাসপাতালে শয্যাসঙ্কট দেখা দেয়ায় ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকার পরিস্থিতি সবচেয়ে শোচনীয়। দেশটির বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, নবেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই কয়েক মাস খুব সতর্ক থাকতে হবে। এরপরও বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যের মানুষের বেপরোয়া আচরণ ও বিধিনিষেধ নিয়ে অনীহার কারণে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের বদলে তার আরও বিপর্যয় ঘটবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে জমায়েত করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ বাড়ার পেছনে এটা অন্যতম প্রধান কারণ বলেই মত বিশেজ্ঞদের। বড়দিন ছাড়া উৎসবের মৌসুমে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কার বিষয়টি মাথায় রেখেই জনসাধারণকে বাড়িতেই উৎসব পালনের নির্দেশ দিয়েছে সিডিসি। ভারতে নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যু কমেছে ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৭২ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত হলেন ৯৪ লাখ ৩১ হাজার ৬৯১ জন। এই সময়ে মারা গেছেন ৪৪৩ জন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ভারতে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৩৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে সুস্থ হয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৩৩ জন। মোট ৮৮ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। ভারতে মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্রে। রাজ্যটিতে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৭১ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে তা সাড়ে ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। দিল্লীতে ৯ হাজার ৬৬, পশ্চিমবঙ্গে ৮ হাজার ৩৭৬, উত্তর প্রদেশে ৭ হাজার ৭৪২ ও অন্ধ্র প্রদেশে ৬ হাজার ৯৮৮ জন মারা গেছেন। পাঞ্জাব, গুজরাট, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিসগড় এবং রাজস্থানেও মোট মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
×