ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের রায়ের সার্টিফায়েড কপি প্রস্তুত

প্রকাশিত: ২২:০০, ৩০ নভেম্বর ২০২০

হাইকোর্টের রায়ের সার্টিফায়েড কপি প্রস্তুত

বিকাশ দত্ত ॥ বহুল আলোচিত বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের মামলার হাইকোর্টের রায়ের সার্টিফায়েড কপি প্রস্তুত হয়েছে। সহসাই আসামিপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আপীল দায়ের করবে। অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে যাদের খালাস দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপীল করবে। এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাইবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেছেন, আমার জানা মতে রায়ের কপি প্রস্তুত করা হয়েছে। রায়ের কপি হাতে পেলেই আমরা আপীল বিভাগে আপীল দায়ের করব। অন্যদিকে হাইকোর্ট যাদের খালাস দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপীল করবে। এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাইবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। এর আগে সুপ্রীমকোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেছিলেন, আসামি পক্ষের আইনজীবী সার্টিফাইট কপির জন্য আবেদন করেছে। বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মামলাটি দুই ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। এখন সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে আপীল করার পালা। হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডসহ মাট ৫৫২ জনকে বিভিন্ন ধরনের দণ্ড প্রদান করা হয়। দেশের ইতিহাসে এটি সর্ববৃহৎ রায়। গত ৮ জানুয়ারি তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর পূর্ণাঙ্গভাবে রায়টি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। মোট ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার রায়। ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নবেম্বর দু’দিন ধরে এ রায়টি প্রদান করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে বিচারপতি মোঃ শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ (বৃহত্তর) বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপীল শুনানি শুরু হয়ে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল ৩৭০ কার্যদিবসে শেষ হয়। বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন-বিচারপতি মোঃ আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার। রায় ঘোষণার ৭৭৪ দিনের মাথায় বিডিআর হত্যা মামলার পূণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, রায়ের সার্টিফায়েট কপি প্রস্তুত করা হয়েছে। আমরা নকলের কপি হাতে পেলেই আপীল বিভাগে আপীল দায়ের করব। এ জন্য হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি লাগবে। কিন্তু এই কপি পেতে যে খরচ পড়বে, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আসামিদের অনেকে। এ ছাড়া নিম্ন্ন আদালতের রায়, সাক্ষী ও অন্যান্য কাগজপত্র আপীলে যুক্ত করতে হবে। এতে প্রচুর অর্থ লাগবে, যা দরিদ্র দণ্ডিতরা বহন করতে অক্ষম। অনুলিপি পাওয়ার পরপরই আপীলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসামি পক্ষের আইনজীবী সার্টিফাইট কপির জন্য আবেদন করেছে। বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে। বিচারপতি মোঃ শওকত হোসেন, বিচারপতি মোঃ আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহত্তর বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২৭ নবেম্বর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় আসামিদের আপীল ও ডেথরেফারেন্সের শুনানি করে রায় দেন। নিয়ম অনুযায়ী, হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় প্রকাশের পর আপীল বিভাগে আপীল করতে পারবে উভয়পক্ষই। এরপর আপীলের বিচারের মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হবে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ২০১৩ সালের ৫ নবেম্বর পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ১৫২ আসামির ফাঁসির রায় দেয় বিচারিক আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোঃ আখতারুজ্জামান বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেয়া বিডিআরের উপসহকারী পরিচালক তৌহিদুল আলমসহ (৫৫) বাহিনীর ১৫২ জওয়ান ও নন কমিশন্ড কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয় রায়ে। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
×