ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সদ্যোজাত শিশুর শরীরে করোনা প্রতিরোধী এ্যান্টিবডির সন্ধান

প্রকাশিত: ২১:২৭, ৩০ নভেম্বর ২০২০

সদ্যোজাত শিশুর শরীরে করোনা প্রতিরোধী এ্যান্টিবডির সন্ধান

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সিঙ্গাপুরে নবজাতকের শরীরে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা এ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আর ব্রিটেনে পরীক্ষার ভুলে ১৩ হাজারের করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া জার্মানিতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল। যদিও বসন্তকাল পর্যন্ত আংশিক লকডাউন থাকবে জার্মানিতে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের। সারাবিশ্বে রবিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৩৮৯ জন মানুষ। মারা গেছেন ১৪ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩১ হাজার ৩০৭ জন। এখনও চিকিৎসাধীন আছেন এক কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার ৯৯৬ জন। যাদের মধ্যে এক লাখ ৫ হাজার ২৭১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৪৭৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। একদিনে মারা গেছেন ৯ হাজার ২৪০ জন। এদিকে সিঙ্গাপুরে সদ্যোজাত এক শিশুর শরীরে করোনা প্রতিরোধী এ্যান্টিবডি মিলেছে বলে দেশটির একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে। জানা গেছে, গর্ভাবস্থায় মার্চে শিশুটির মা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি মাসে জন্ম নেয়া তার শিশুর শরীরে কোভিড-১৯ পাওয়া যায়নি বরং ভাইরাস প্রতিরোধী এ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে বলে রবিবার ওই নারীর বরাত দিয়ে স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনা আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে শিশুর দেহে এ্যান্টিবডি স্থানান্তরিত হয় কিনা সে সম্পর্কিত রহস্য সমাধানে এ ঘটনা নতুন সূত্র হাজির করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেলিন এনজি-চ্যান নামের ওই নারী বলেছেন, গর্ভাবস্থায় আমার কোভিড-১৯ এ্যান্টিবডি আমার ছেলের কাছে গেছে বলে সন্দেহ চিকিৎসকদের। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং হাসপাতালে দুই-আড়াই সপ্তাহ চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়েছিলেন। সদ্যোজাত শিশুর দেহে এ্যান্টিবডি পাওয়া প্রসঙ্গে এনজি-চ্যান কিংবা যেখানে তিনি শিশুটির জন্ম দিয়েছেন, সেই ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের (এনইউএইচ) মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত কোন গর্ভবতী নারীর কাছ থেকে তার ভ্রুণ বা শিশুর মধ্যে গর্ভাবস্থা বা বাচ্চা জন্ম দেয়ার কালে করোনা যেতে পারে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত বুকের দুধ বা গর্ভের শিশুর আশপাশের তরলের নমুনায় ভাইরাসের সক্রিয় উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। চীনের চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্ত নারীর জন্ম দেয়া শিশুর শরীরে কোভিড-১৯ এ্যান্টিবডির উপস্থিতি শনাক্ত এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পরিমাণ কমে আসার কথা জানিয়েছেন বলে অক্টোবরে জার্নাল ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে। একই মাসে শিশুরোগ সংক্রান্ত জার্নাল জেএএমএ পেডিয়াট্রিক্সে নিউইয়র্ক- প্রেসবাইটেরিয়ান/ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরভিং মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকরা মায়ের কাছ থেকে সদ্যজাত শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণের ঘটনাকে বিরল বলে অভিহিত করেছেন। বসন্ত পর্যন্ত আংশিক লকডাউন ॥ জার্মানিতে ২ নবেম্বর থেকে চলমান লকডাউন ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। দেশব্যাপী চলমান লকডাউনে করোনা সংক্রমণ আশানুরূপ নিয়ন্ত্রণে না আসায় এবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আগের বিধিনিষেধ কঠোর করা হয়েছে। চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল ও রাজ্যপ্রধানদের ভিডিও কনফারেন্স শেষে নতুন বিধিনিষেধের কথা জানানো হয়। আগের মতো রেস্তরাঁ-বার, ফিটনেস স্টুডিও, সুইমিং পুল, থিয়েটার আপাতত বন্ধ থাকবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে ২ পরিবারের ১০ জন সদস্য একত্রিত হওয়ার অনুমতি থাকলেও ১-২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সংখ্যা ৫ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতাও বাড়ানো হয়েছে। তবে এবারও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি বেঁধে দিয়ে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলা রাখা হয়েছে। চ্যান্সেলর মেরকেল বলেছেন, দুর্ভাগ্যক্রমে এটি অনুমান করা যাচ্ছে না- ২০ ডিসেম্বর থেকে রেস্তরাঁ ও হোটেল চালু করা সম্ভব হবে কিনা। নতুন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না এলে চলমান আংশিক লকডাউন আরও বাড়ানো হতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের পথে এগোচ্ছে ভারত ॥ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটির ঘর ছাড়িয়েছে আগেই। এবার সেই পথে এগোচ্ছে ভারতও। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৪১ হাজার ৮১০ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ লাখ ৯২ হাজার ৯১৯ জন। এই সময়ে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৯৬ জন। এখনও পর্যন্ত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ২৯৮ জন সুস্থ্যসহ মোট ৮৮ লাখ ২ হাজার ২৬৭ জন কোভিড রোগীই সেরে উঠেছেন। রবিবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বুলেটিনে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে।
×