নিজস্ব সংবাদদাতা,মাধবপুর,হবিগঞ্জ ॥ অন্যের দুয়ারে ঘুরে ঘুরে পেট চলে বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী নাদু মিয়ার। ১৫-১৬ বছর আগে কুমিল্লায় সড়ক দূর্ঘটনায় তার কোমর ভেঙ্গে যায়। তারপর থেকে মা মরা দুটি মেয়ের ভরণপোষণের জন্যে আর বাঁচার তাগিদে নিজে লাঠি ভর দিয়ে নেমে পড়েন ভিক্ষাবৃত্তিতে। এক সময়ের বাস চালক নাদু মিয়া দশ বছর ধরে ভিক্ষা করলেও খবর রাখেন না জনপ্রতিনিধি বা স্থানীয় সমাজকর্মীরা। ভিটে বাড়ি না থাকায় নাদু মিয়া এখন বিয়ের উপযুক্ত মা মরা দুটি মেয়ে নিয়ে থাকেন অন্যের বাড়িতে। মুক্তিযুদ্ধের পর নাদু মিয়ার বাবা চেরাগ আলী নোয়াখালী থেকে মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের মালঞ্চপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। এখন বৃদ্ধ বয়সে ভিক্ষা করে কোন রকমে ঠিকে আছে। জনপ্রতিনিধিদের পিছু হেঁটেও নিজের জন্য একটি ভাতার কার্ড জোগাড় করতে পারেননি। করোনার বিশেষ ত্রাণের ৮ কেজি চাল ছাড়া আর সরকারি কোনো সহায়তা পান না তিনি।
প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ নাদু মিয়া বলেন, এক সময় বাসের চালক ছিলাম। যা আয় ছিল তা দিয়ে ভালো ভাবেই সংসার চলতো। হঠাৎ একদিন সড়ক দূর্ঘটনায় আমার কোমর ভেঙ্গে যায়। এতে কিডনিতেও সমস্যা দেখা দেয়। তারপর থেকে আর কোন কাজ করতে পারিনা। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে যা পাই তাতে কোনো রকম দুইটি মেয়ে নিয়ে দিন চলছে। বয়স হয়েছে অনেক দিন গ্রামে ভিক্ষা করতে যেতে পারিনা । যে দিন গ্রামে ভিক্ষা করতে যেতে পারিনা সকাল-বিকেল প্রতিবেশিদের দ্বারে ঘুরে ঘুরে দুমুঠো খাবার জোগার করি। বৃদ্ধ নাদু মিয়া আরও বলেন, একখান ভাতার কার্ডের জন্যে মেম্বারের পিছু অনেক ঘুরেছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। বিয়ের উপযুক্ত মেয়েদের নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ধর্মঘর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল ইসলাম কামাল বলেন, আপাতত ভাতার কার্ড নেই। তবে মানবিক বিবেচনা করে তাকে কার্ড দেওয়া হবে। মাধবপুর সমাজ সেবা কর্মকর্তা আলী আশ্রাব জানান, প্রতিবন্ধী হিসেবে সুবর্ন কার্ড পাওয়ার পর তাকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করা হবে। প্রতিবন্ধীদের বেলায় ভাতার কার্ড শত ভাগ অগ্রাধিকার।