ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মূলধন কমেছে আড়াই হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ২৮ নভেম্বর ২০২০

মূলধন কমেছে আড়াই হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে প্রায় দীর্ঘ একমাস পরে চাহিদার তালিকায় ফিরে এসেছে বিমা খাত। জুন ক্লোজিংয়ের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণা শেষের দিকে চলে আসায় বিনিয়োগকারীরা ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। তাই সার্বিকভাবে বিমা, ব্যাংক বর্হিভুত আর্থিক খাত এবং ব্যাংকের দর বেড়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে তার চেয়ে বেশি। এরপরও আড়াই হাজার কোটি টাকার উপরে হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে তারা এ অর্থ হারিয়েছেন। সেই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ৫ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। এর ফলে টানা দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন কমলো ৭ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে। এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ কমলো সূচকটি। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৫ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৩৭ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৫ শতাংশ। প্রধান মূল্য সূচকরে পাশাপাশি টানা তিন সপ্তাহ পতন হয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ১১ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১০ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬০ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ১৪ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৮১ শতাংশ। এদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। অবশ্য তার আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ। সবকটি মূল্য সূচকের পতন হলেও সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে, বেড়েছে তার চেয়ে বেশি। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪৪টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪০টির। আর ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৮১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৫২ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ১৪৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৯০৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৭৬০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৮২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এছাড়া ‘বি গ্রুপের ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, জেড গ্রুপের ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রপের ৪ দশমিক ২০ শতাংশ অবদান ছিল। গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে - বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, নিটল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, এডিএন টেলিকম, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ও ব্র্যাক ব্যাংক।
×