ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুর্নীতি, অনিয়মে লাভের মুখ দেখছে না জিল বাংলা সুগার মিল

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২৮ নভেম্বর ২০২০

দুর্নীতি, অনিয়মে লাভের মুখ দেখছে না জিল বাংলা সুগার মিল

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ২৭ নবেম্বর ॥ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবহেলা, অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে কোটি কোটি টাকার লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠান জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের জিল বাংলা সুগার মিল। জানা যায়, ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সরকার যৌথভাবে গড়ে তোলে জিল বাংলা সুগার মিলটি। সে সময় শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল জিল পাক সুগার মিলস লিমিটেড। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে জিল বাংলা সুগার মিল রাখা হয়। জিল বাংলা সুগার মিলটি পূর্বাঞ্চলের একমাত্র ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ মিলটির আখ মাড়াই ক্ষমতা ৭০ হাজার ৬৯০ টন এবং চিনি উৎপাদন ক্ষমতা পাঁচ হাজার ১৫৩ টন। বর্তমানে মিলটিতে অবিক্রীত চিনি আছে ২ হাজার ৬৭ টন, যার মূল্য ১২ কোটি ৪০ লাখ ১৭ হাজার টাকা। প্রতি কেজি চিনি উৎপাদন খরচ ১৮২ টাকা আর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। বর্তমানে মিলটিতে কর্মকর্তা রয়েছে ৩৬ জন এবং কর্মচারী ও শ্রমিক রয়েছে ৯০০ জন। প্রতি মাসে বেতন পরিশোধ করতে হয় প্রায় ৯১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত মিলের কর্মচারীদের তিন মাসের বেতনও বকেয়া রয়েছে। তিন মাসে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। যথাযথ তদারকির অভাব, চাষীদের প্রতি অবহেলা আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছরই লোকসান গুনছে। লোকসানের কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জিল বাংলা সুগার মিল প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৬২টি মাড়াই মৌসুম পেয়েছে। ৬২ মাড়াই মৌসুমের মধ্যে মাত্র ১৮টি মৌসুমে লাভ হয়েছিল। বরাবরের মতো এবারও প্রতিষ্ঠানটি লোকসান দিয়েছে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা জানান, মিলটির বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। অবহেলা, অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণেই মিলটি আজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। আখ চাষীদের নানাভাবে হয়রানি, নিম্নমানের বীজ, সারের অভাব রয়েছে। মিলে আখ দিলে সঠিক সময়ে সেই আখের মূল্য পরিশোধ করা হয় না। আখ চাষীরা সঠিক সময়ে আখ মিলে সরবরাহ করতে পারে না। চরাঞ্চলের বালু মাটিতে আখ দ্রুত মরে যায়। সে সময়ে মিল কর্তৃপক্ষ অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করে।
×