ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ঋষিজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গুণীজন সম্মাননা ও সঙ্গীত পরিবেশনা

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ২৮ নভেম্বর ২০২০

ঋষিজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গুণীজন সম্মাননা ও সঙ্গীত পরিবেশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত সত্তরের দশকের কথা। দেশজ সংস্কৃতির লালন ও বিকাশের প্রত্যয়ে ১৯৭৬ সালের ২২ নবেম্বর গড়ে ওঠে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। জন্মলগ্ন থেকেই বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও শেকড়ের অনুসন্ধানী ব্রত নিয়ে কাজ করছে জীবনের কথা বলা সাংস্কৃতিক সংগঠনটি। সময়ের স্রোতধারায় এ বছর পূর্ণ করে প্রতিষ্ঠান ৪৪ বছর। আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শুক্রবার সেই সাফল্যের উদ্্যাপন করে ঋষিজ। একই আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন করা হয়। আলোচনার সঙ্গে সুরাশ্রিত সঙ্গীত পরিবেশনা এবং গুণীজন সংবর্ধনা প্রদানের মাধ্যমে সাজানো হয় আয়োজন। হেমন্তের বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সংগঠনের সভাপতি গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। জাতীয় সঙ্গীতের সুরে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনেক কণ্ঠ মিলে যায় এক সুরে। ঋষিজের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে গীত হয় ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এরপর পরিবেশিত হয় উদ্বোধনী সঙ্গীত ‘আমরা ঋষিজ করি’। গান শেষে করোনাকালে মৃত্যুবরণকারী সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অনুষ্ঠানে পাঁচ গুণীজনকে সংবর্ধনা প্রদান করে ঋষিজ। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- প্রখ্যাত নাট্য ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব নওয়াজীশ আলী খান, অভিনেত্রী সালমা বেগম সুজাতা, কণ্ঠশিল্পী খুরশীদ আলম, মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ এবং বাচিকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতার শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তার একটা জ্বলন্ত উদাহরণ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে উগ্রপন্থীদের মাতামাতি। দেশে সংস্কৃতির চর্চা কম বলে উগ্রপন্থী ও স্বাধীনতার শত্রুরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে সংস্কৃতিচর্চাকে আরও বেগবান করতে হবে। সংস্কৃতিচর্চা যত বেশি হবে রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে উগ্রবাদ এবং জঙ্গীবাদ তত বেশি নির্মূল হবে। আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ আরও বেশি করে জানার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আজকে যারা সম্মাননা পেল তারা সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক আয়োজনে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠী, স্ব-ভূমি লেখক কেন্দ্র, আনন্দম, পঞ্চভাস্কর, সমস্বর, উজান, উঠোন, ঋষিজ ও সংস্কৃতি মঞ্চ। দলীয় সঙ্গীতের প্রতিটি পরিবেশনায় উচ্চারিত হয় বঙ্গবন্ধুর কীর্তিগাথা। লোকগানের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কয়েকটি গান পরিবেশন করেন গানের দলগুলো। বাণী আর সুরে বঙ্গবন্ধুকে মূর্ত করে তোলেন শিল্পীরা।
×