ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ‘পরম্পরা’ ঘুরছে শহরজুড়ে

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ২৮ নভেম্বর ২০২০

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ‘পরম্পরা’ ঘুরছে শহরজুড়ে

মনোয়ার হোসেন ॥ শহরের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে বই। মূলত গ্রন্থাগারের আদলে গড়া পিকআপ ভ্যানে চড়ে ঘুরছে। এভাবেই পরম্পরা নামের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিটি পরিভ্রমণ করছে রাজধানীর উত্তর অংশে। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বইপ্রেমীদের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে বইগুলো। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর জীবনের নানা অধ্যায় মেলে ধরা গ্রন্থগুলো আগ্রহ নিয়ে সংগ্রহ করছেন গ্রন্থানুরাগীরা। কেউবা আবার সরাসরি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে বসেই পছন্দের বইটি পড়ার সুযোগ গ্রহণ করছেন। বৃহস্পতিবার মিরপুরের দারুসসালাম এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডে ঘুরে এই চলমান বইগাড়ি। গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে মুজিববর্ষের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনকে উপলক্ষ করে এই ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার চালু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। আগামী বছরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডে পরিভ্রমণ করবে এই বইগাড়ি। ইতোমধ্যে নয়টি ওয়ার্ডে সম্পন্ন হয়েছে কার্যক্রম। এ বিষয়ে পরম্পরার কার্যক্রম পরিচালনাকারী মাহমুদ রেজা জনকণ্ঠকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-এই পরম্পরাই বাঙালী জাতির পরম্পরা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে উন্নয়নের পরম্পরা। নতুন প্রজন্মকে এই পরম্পরা জানানোর লক্ষ্যেই ‘পড়ি পরম্পরা, জানি নেতৃত্ব’ প্রতিপাদ্যে ডিএনসিসির এই কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। গ্রন্থানুরাগীদের কাছে দারুণভাবে সমাদৃত হয়েছে এই কার্যক্রম। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার জীবনের নানা অধ্যায় মেলে ধরা এবং তাদের নিজের লেখা বইগুলো আকৃষ্ট করছে পাঠককে। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিন দিন করে অবস্থান করছে চলমান এই লাইব্রেরি। আর করোনাকালে ঘরের দুয়ারে বই পাওয়ার সুযোগটি সাদরে গ্রহণ করছেন বইয়ের অনুরাগীরা। কেউ সংগ্রহ করছেন আবার কেউবা ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারে বসেই পড়ে নিচ্ছেন পছন্দের বইটি। বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরের দারুসসালাম এলাকায় অবস্থান করছিল এই বইগাড়ি। শাফিন আহমেদ নামের এক পথচলতি শিশু অভিভাবককে নিয়ে দাঁড়িয়ে যায় চলমান লাইব্রেরির সামনে। ষষ্ঠ শ্রেণীর এই শিক্ষার্থীর চোখ আটকে যায় সিআরআই থেকে প্রকাশিত ‘মুজিব’ গ্রাফিক নোভেলে। এরপর বাবাকে রাজি করিয়ে সংগ্রহ করে বইটি। কথা প্রসঙ্গে সে জানায়, এমন সুন্দর ছবির সঙ্গে সহজ ভাষায় বঙ্গবন্ধুর জীবনী যে এভাবে বের হয়েছে তা সে জানত না। তাই ছবিভিত্তিক এই জীবনীগ্রন্থটি সংগ্রহের সুযোগটি হাতছাড়া করেনি। ভ্রাম্যমাণ এই লাইব্রেরিতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত নানা বিষয়ের বই। রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা বই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত বিশ্লেষণমূলক বইও রয়েছে এতে। স্থান পেয়েছে সিআরআই প্রকাশিত বই। আরও রয়েছে চর্চা, শ্রাবণ, চৈতন্য, পাঠক সমাবেশ ও বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত নির্বাচিত বইসমূহ। এতে ঠাঁইপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে- শেখ মুজিবুর রহমান রচিত বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’, চর্চা থেকে প্রকাশিত ‘হাসুর পৃথিবী’, ‘হাসুর দেশ’, ‘মুক্তির প্রতীক্ষায় হাসিনা’, ‘শেখ হাসিনার ফেরা’ প্রভৃতি। সিআরআই থেকে প্রকাশিত গ্রাফিক নোভেল ‘মুজিব’-এর প্রথম থেকে অষ্টম খণ্ড পর্যন্ত প্রভৃতি। ভ্রাম্যমান লাইব্রেরির বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, পরম্পরার ফেসবুক পেজে প্রতিদিন কোন্ স্থানে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থাকবে তা আগাম জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে সেই এলাকার বই সংগ্রহে আগ্রহীরা নির্দিষ্ট দিনে সুবিধাজনক সময়ে হাজির হতে পারে।
×