ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান পাঁচ হাজার ৮৫০ মিটার

প্রকাশিত: ১৭:৩৯, ২৭ নভেম্বর ২০২০

পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান পাঁচ হাজার ৮৫০ মিটার

সংবাদদাতা, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১০ থেকে ১১ নং পিয়ারের উপর বসানো হয়েছে পদ্মা সেতুর ৩৯ তম ‘ডি-২’স্প্যান আর এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে মূল সেতুর পাঁচ হাজার ৮৫০ মিটার। শুক্রবার দুপুর সোয়া বারোটায় পদ্মা বহুমুখি সেতু প্রকল্পের দক্ষ প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় সফল ভাবে স্প্যানটি বসানো হয় বলে জানান পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের। তিনি আরো জানান, ৩৮তম স্প্যান বসানোর ৭দিনের মাথায় বসানো হয়েছে ৩৯ তম স্প্যান। আর পদ্মা সেতুর শতভাগ দৃশ্যমান হতে প্রয়োজন দুটি স্প্যান। সেতুর প্রকৌশলীরা আরো জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টক জেটিতে সম্পূর্ন প্রস্তুত অবস্থায় থাকা ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার লম্বা তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের ৩৯ তম স্প্যানটি নিয়ে সোয়া বারোটায় পিয়ার দুটির উপরে বেয়ারিং বসিয়ে সেটিং করা হয়। ৩৯তম স্প্যানটি বসাতে কম সময় লাগার কারন হিসেবে প্রকৌশলীরা জানান, মাওয়া প্রান্তের মাঝ নদীতে ১০ ও ১১ নম্বও পিয়ার হওয়ায় নদীর গভীরতা ঠিক থাকায় দ্রুত সময়ে পিয়ারের নিকট স্প্যানবাহী ক্রেন পৌঁছায়। কারিগরি সমস্যা না থাকায় অল্প সময়ের মধ্যেই স্প্যানটি বসিয়ে দেয়া হয়। ইতিপূর্বে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ৩৮তম স্প্যান বসানোর বিলম্ব হওয়ার কারন ছিল পদ্মা নদীতে ২নং পিয়ার থাকলেও ১নং পিয়ারটি ডাঙ্গায় ছিল। আর দুটি স্প্যানের মধ্যবর্তী স্থানে ক্রেনবাহী জাহাজ ‘‘ তিয়ান ই’ চলাচলের মত পানির গভিরতা না থাকায় নোঙ্গর করতে পারছিল না। পরে ড্রেজিং করে নাব্যতা কাটিয়ে পরবর্তীতে সফল ভাবে স্প্যানটি বসানো হয়। এর আগে অক্টোবর মাসে ৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। চলতি নবেম্বর মাসেও ৪টি বসানো হলো। আর বিজয় দিবসের পূর্বেই বাকি ২টি স্প্যান বসানো হবে বলে জানান পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা। ডিসেম্বর মাসের ৬ বা ৭ তারিখ ১১ থেকে ১২ নং পিয়ারের উপর ৪০ তম স্প্যান বসানো হবে। সর্বশেষ স্প্যানটি বিজয় দিবসের ৫দিন পূর্বে ১০ই ডিসেম্বর বসানোর জন্য পুরোদমে চলছে কর্মযজ্ঞ। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান শুরু হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৯টি স্প্যান। ৪২টি পিয়ারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিয়ার দৃশ্যমান হয়েছে। বাকি স্প্যান গুলো পিয়ারের উপর উঠানোর জন্য প্রস্তুত করা আছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। সেতুর উপরের অংশে যানবাহন আর নিচে চলবে ট্রেন তার নিচ দিয়ে নৌযান।
×