ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে কঠোর অবস্থানে সরকার ॥ ইন্দিরা

প্রকাশিত: ২৩:১১, ২৬ নভেম্বর ২০২০

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে কঠোর অবস্থানে সরকার ॥ ইন্দিরা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার কঠোর অবস্থানে। সরকার নারী নির্যাতন বন্ধ, নারী নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আইনী সহায়তা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’-এর স্থলে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড’-এর বিধান রাখা হয়েছে। সংশোধিত আইনের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ইউনাইটেড নেশনস ইন বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ১৬ দিনব্যাপী কর্মসূচীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডিএনএ প্রোফাইলিং ও স্ক্রীনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে। নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা নারীর মানবাধিকারের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, এই নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ করতে সরকারের সঙ্গে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই সবার সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা নারী ও শিশুর প্রতি সকল ধরনের নির্যাতন এবং সহিংসতামুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারব। প্রতিমন্ত্রী ইউএন উইমেন প্রকাশিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, বিশ্বে ৩৫ শতাংশ নারী বা প্রায় প্রতি তিনজনে একজন নারী তার জীবন পরিক্রমায় শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা ঘটে আপনজনের দ্বারা। সহিংসতার স্বীকার ৪০ শতাংশের কম নারী সহায়তা পেয়ে থাকে। বিশ্বে মোট মানব পাচারের ৭২ শতাংশ নারী ও শিশু। তিনি আরও জানান, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন বাল্যবিয়ের স্বীকার হচ্ছে। করোনায় হেল্পলাইনে ফোন করার হার বেড়েছে ৫ গুণ বেশি। ইউরোপের দেশে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন নারী সাইবার ক্রাইমের স্বীকার হচ্ছে। তাই নারীর প্রতি সংঘটিত সব ধরনের নির্যাতন ও অপরাধ নির্মূল করার জন্য বিশ্বব্যাপী সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তারের সভাপতিত্বতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশে ইউএন রেসিডেন্ট কোর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পো ও বাংলাদেশে নিযুক্ত কমনওয়েলথ উন্নয়ন পরিচালক জুডিথ হারবার্টসন। স্বাগত বক্তব্য দেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টোরাল প্রোগ্রামের পরিচালক ড. আবুল হোসেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করা যাচ্ছে। নারী ও কন্যা শিশুর নির্যাতন বন্ধ করতে সরকার প্রচলিত বিভিন্ন আইনের সংশোধন ও নতুন আইন প্রণয়ন করেছে।
×