ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অনুমোদন দিয়েছে দুদক

এফ আর টাওয়ারের নক্সা জালিয়াতি॥ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৬ নভেম্বর ২০২০

এফ আর টাওয়ারের নক্সা জালিয়াতি॥ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী বনানীর এফ আর টাওয়ারে নক্সা জালিয়াতি দুর্নীতি মামলায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে এজাহারভুক্ত ৭ আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন ৫ জনকে চার্জশীটভুক্ত করেছে সংস্থাটি। বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ চার্জশীট অনুমোদন দেয়া হয়। দুদকের পরিচালক জনসংযোগ প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জনকণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০১৯ সালের ২৫ জুন কমিশনের উপ-পরিচালক মোঃ আবুবকর সিদ্দিক ২০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তিনিই তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গণপূর্ত অধিদফতরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ নাজমুল হুদা মৃত্যুবরণ করায় তাকে চার্জশীট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান কে এ এম হারুন, সাবেক সদস্য মোঃ রেজাউল করিম তরফদার, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া, সাবেক প্রধান ইমারত পরিদর্শক মোঃ মাহবুব হোসেন সরকার, সাবেক ইমারত পরিদর্শক মোঃ আওরঙ্গজেব সিদ্দিকি ও গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সামছুর রহমান। চার্জশীটভুক্ত নতুন আসামিরা হলেন রাজউকের উচ্চমান সহকারী মোঃ সাইফুল আলম, ইমারত পরিদর্শক ইমরুল কবির, ইমারত পরিদর্শক মোঃ শওকত আলী, উচ্চমান সহকারী মোঃ শফিউল্লাহ ও সাবেক অথরাইজড অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম। অন্যদিকে, মূল মামলার আসামিরা হলো এফ আর টাওয়ারের মালিক এস এম এইচ আই ফারুক, এফ আর টাওয়ার ওনার্স সোসাইটির সভাপতি কাসেম ড্রাইসেলের এমডি তাসভীর-উল-ইসলাম, সাবেক পরিচালক মোঃ শামসুল আলম, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, সহকারী পরিচালক শাহ মোঃ সদরুল আলম, সহকারী অথরাইজড অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক জাহানারা বেগম, সহকারী পরিচালক মেহেদউজ্জামান, নিম্নমান সহকারী মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা ও লিয়াকত আলী খান মুকুল এবং অফিস সহকারী মোঃ এনামুল হক। এছাড়া, বিসিএসআইআরের সদস্য (অর্থ) মুহাম্মদ শওকত আলী ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুল্লাহ আল বাকিও মামলায় আসামি ছিলেন। যারা অনুমোদিত চার্জশীটের আসামি। আসামিদের বিরুদ্ধে রাজউকের ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফ আর টাওয়ারকে ১৯ তলা থেকে বাড়িয়ে ২৩ তলা করা, ওপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেয়া ও বিক্রি করার অভিযোগ আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, এফ আর টাওয়ারকে ১৫তলা পর্যন্ত নির্মাণে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন ও নক্সা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর চার্জশীট দেয় দুদক। চার্জশীটে এফ আর টাওয়ার ভবনের এসএমএইচ আই ফারুক ও লিয়াকত আলী খান মুকুলসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ জন নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। কামাল আতাতুর্ক এ্যাভিনিউয়ে ওই ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার। অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ৪টি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এর মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি নক্সা অনুমোদনে বিধি লঙ্ঘন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এফ আর টাওয়ারের ১৮ তলার নক্সা অনুমোদন করা হয়েছিল বিধি লঙ্ঘন করে। তার ওপরে আরও পাঁচটি ফ্লোর নির্মাণের নক্সাকে বৈধতা দিতে বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি হয়। নিয়মের লঙ্ঘন ছিল ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রেও।
×