ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শীত বাড়বে কাল থেকে

দক্ষিণ ভারত উপকূলে আঘাত হেনেছে নিভার

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৬ নভেম্বর ২০২০

দক্ষিণ ভারত উপকূলে আঘাত হেনেছে নিভার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘূর্ণিঝড় নিভার কেটে যাওয়ার পর আগামীকাল শুক্রবার থেকে দেশে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। নিভার বুধবার রাতেই দক্ষিণ ভারতীয় উপকূলে আছড়ে পড়ে। এর প্রভাবে এদিন বিকেল থেকে দেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, আজও বৃহস্পতিবার আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। এছাড়াও এর প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টি এবং আকাশ মেঘলা থাকার কারণেই আগামী দুদিন দেশে শীত বাড়তে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় নিভার আঘাত হানার আগের কেন্দ্রের ৬৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৯ কি. মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে আবহাওয়া অধিদফতরের পরবর্তী নির্দেশনা সাবধানতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে নিভারের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে আকাশ মেঘলা ছিল। যদিও এর প্রভাবে দেশের কোথাও এদিন বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়নি। তাপমাত্রাও আগের দিনের চেয়ে অপরিবর্তিত ছিল। বুধবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ময়মনসিংহে ১৩.৮ ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঢাকায় ২৭.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আংশিক মেঘলা আকাশসহ দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এদিকে ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিভার আঘাত হানার আগেই দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য চেন্নাইয়ে বুধবার বিকেল থেকে ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সেখানে নিচু এলাকাগুলো ইতোমধ্যেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেখান থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কোন রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তামিলনাড়ু সরকার চেন্নাইসহ ১৩টি জেলায় বৃহস্পতিবার ছুটি ঘোষণা করেছে। চেন্নাই বিমানবন্দর ২৪টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, শীতকাল এগিয়ে আসায় দেশের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমছে। ফলে রাতের ভাগে শীত বাড়ছে। বুধবার দেশের অধিকাংশ স্থানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রেকর্ড করা হয়েছে। অপরদিকে সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ থেকে ১৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে। ইতোমধ্যে রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষ গরম কাপড় গায়ে জড়িয়েছে। এদিন ঢাকা বিভাগে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ২৭.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬.১ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে। দেশের অন্যান্য বিভাগের তাপমাত্রা আস্তে আস্তে নামছে। রংপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন ১৫.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সিলেট বিভাগের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৭.৮ এবং সর্বনিম্ন ১৫.৭, ময়মনসিংহের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬.৫ এবং সর্বনিম্ন ১৩.৮ ডিগ্রী, রাজশাহী বিভাগের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৭.৩ এবং সর্বনিম্ন ১৫ ডিগ্রী, খুলনায় সর্বোচ্চ ২৭.৪ এবং সর্বনিম্ন ১৫.৫ এবং বরিশাল বিভাগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ২৭.৮ এবং সর্বনিম্ন ১৪.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় নিভারের প্রভাব এদেশে না পড়লেও এর কারণে প্রচুর পরিমাণে জলীয় কণা বাতাসে প্রবেশ করেছে। এ কারণে বুধবারে দিনের ভাগে বেশ গরম অনুভূত হয়। আজও এ কারণে দিনের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকতে পারে। তবে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে তাপমাত্রা বেশ কমে যেতে পারে। এ কারণে দুদিন বেশ শীত অনুভূত হবে। তারা জানান ডিসেম্বর থেকে শীত বাড়বে। ডিসেম্বরে দেশে কোন কোন এলাকায় তাপমাত্রা কমে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে চলে আসতে পারে। ফলে সে সময় অস্বাভাবিক শীত অনুভূত হবে। তারা জানান, দেশে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রী সেলসিয়ামের মধ্যে এলে তাকে মাঝারি এবং ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। সাধারণত ডিসেম্বরে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তখন তাপমাত্রা কমে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে চলে আসতে পারে।
×