ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বমঞ্চে আবার নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র ॥ বাইডেন

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৬ নভেম্বর ২০২০

বিশ্বমঞ্চে আবার নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র ॥ বাইডেন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মার্কিন নির্বাচনে হেরে গিয়ে অনেকটাই এলোমেলো হয়ে পড়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একবার পরাজয় মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে পরক্ষণেই তার উল্টো টুইট করছেন। সবশেষ টুইটে ফের ইউটার্ন নিলেন ট্রাম্প। কখনও পরাজয় মানবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। অথচ এর কয়েক ঘণ্টা আগে টুইটে ট্রাম্প হার মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দেন। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, রয়টার্স, ফক্স নিউজ, লস এ্যাঞ্জেলেস টাইমস ও ইউএসএ টুডের। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার মার্কিন জেনারেল সার্ভিস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জেএসএ) নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনকে প্রস্তুতি শুরু করার চিঠি দিয়েছে। এ চিঠি দেয়ার কিছুক্ষণ পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জিএসএ প্রধান এমিলি মারফিকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেন। এতে বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে, ট্রাম্প নমনীয় হয়েছেন। তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের পথে হাঁটছেন। এর মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে মঙ্গলবার ভোরে দেয়া আরেক টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্নীতির নির্বাচনে তিনি কখনও পরাজয় মেনে নেবেন না। ভুয়া ব্যালটের কাছে তিনি কখনও পরাজয় মেনে নেবেন না। সকালে আরেক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, মনে রাখবেন- জিএসএ দুর্দান্ত এবং এমিলি মারফি দারুণ কাজ করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন, সেটি জিএসএ ঠিক করে দেয় না। মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বারবার এ অবস্থান বদলকে তার চারিত্রিক দৃঢ়তার দুর্বলতা হিসেবেই দেখছেন। তারা বলছেন, অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, ভোট কারচুপির অভিযোগ নিম্ন আদালতে খারিজ হওয়ার পর এখন প্রেসিডেন্ট ট্র্রাম্প সুপ্রীমকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছেন। এর আগেও প্রেসিডেন্ট ট্র্রাম্প একাধিক টুইটে একবার নির্বাচনে ভরাডুবি মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দেন। পরক্ষণেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন। গত ১৪ নবেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয় স্বীকার করে নিয়ে পরক্ষণেই সুর পাল্টান বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিশ্বমঞ্চে আবার নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র ॥ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি বদলে যুক্তরাষ্ট্র ফের বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী বাইডেন। মঙ্গলবার ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে এক অনুষ্ঠানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো মিত্রদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। এদিন নিজের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা দলের কর্মকর্তাদের নাম জানিয়ে বাইডেন বলেছেন, এই দলের মাধ্যমে এটাই প্রতিফলিত হতে যাচ্ছে যে ‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’। জানুয়ারির ২০ তারিখ দায়িত্বভার নেয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুসৃত ‘একতরফা জাতীয়তাবাদ’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দূরে সরিয়ে নেয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী এ রাজনীতিক। ডেমোক্র্যাট প্রার্থিতার দৌড়ে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা দুই বাম ঘরানার সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ও এলিজাবেথ ওয়ারেন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন না বলেও ধারণা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে রিপাবলিকানদের আধিপত্য ঠেকাতে ওই দুইজনের ভোট তার জন্য খুবই জরুরী। ট্রাম্পের ৪ বছর ইউরোপ ও বিশ্বের অন্যত্র যুক্তরাষ্ট্র্র্রের পুরনো মিত্রদের ব্যাপক অস্বস্তিতে ফেলেছিল। সামরিক জোট ন্যাটোর অন্য সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব, মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তি ও সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসা এবং কর্তৃত্ববাদী শাসকদের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছিল। নিজের বেছে নেয়া কর্মকর্তাদের ইঙ্গিত করে বাইডেন বলেছেন, এটা সেই দল যার মাধ্যমে প্রতীয়মান হবে যে যুক্তরাষ্ট্র ফিরছে এবং পিছু না হটে বিশ্বকে ফের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। ফের টেবিলে প্রধান হিসেবে বসে শত্রুদের মুখোমুখি হতে এবং মিত্রদের খারিজ না করতে প্রস্তুত। প্রস্তুত নিজেদের মূল্যবোধগুলোর জন্য দৃঢ়পায়ে দাঁড়াতে। নির্বাচনে জয়ী এ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী এখন পর্যন্ত এ্যান্টনি ব্লিনকেন, জন কেরিসহ যে কয়েকজন কর্মকর্তা বেছে নিয়েছেন তাদের প্রায় সবাই ওবামা প্রশাসনে কোন না কোন দায়িত্বে ছিলেন। বাইডেনের নতুন প্রশাসনকে ট্রাম্পের রেখে যাওয়া অনেক ক্ষত মেরামতের দিকেই বেশি মনোযোগ দিতে হবে বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের। এখন পর্যন্ত নাম ঘোষণা করা না হলেও বাইডেনের নতুন প্রশাসনে অর্থমন্ত্রী হিসেবে জ্যানেট ইয়েলেনই আসতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। ইয়েলেন ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র্রের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের শীর্ষ পদে ছিলেন। হোয়াইট হাউস আন্তরিক ॥ বাইডেন বলেছেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ’আন্তরিক’ সাড়া পাওয়া গেছে। এনবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে রুষ্ট আচরণ দেখেননি এবং তা দেখতেও চান না। এনবিসির নাইটলি নিউজকে দেয়া সাক্ষাতকারে এ ডেমোক্র্যাট নেতা জানিয়েছেন, এখনও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার কথা হয়নি। তিনি আশা করেন, তার মেয়াদের শুরুতেই ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াজনিত বিলম্বের প্রভাব পড়বে না। এটি ধীরগতির সূচনা। তবে এটি হচ্ছে তো। আর দুই মাস বাকি আছে। কাজের গতি বজায় রাখার বিষয়ে আমি খুব আশাবাদী। ভ্যাকসিন বিতরণ ও ভ্যাকসিন সহজলভ্য করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হোয়াইট হাউসের কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সকে দায়িত্ব দেবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা ব্রিফিং পাচ্ছেন বাইডেন ॥ শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা ব্রিফিং পেতে যাচ্ছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। নিয়ম অনুযায়ী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট শুরু থেকেই এটি পাওয়ার কথা। নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে ট্র্রাম্পের অস্বীকৃতি ও আইনী চ্যালেঞ্জের মতো নানা জটিলতার কারণে এবার এখন পর্যন্ত এ ব্রিফিং পাননি বাইডেন। ট্রাম্প ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরুর অনুমোদন দেয়ায় এখন থেকে নিয়মিত গোয়েন্দা ব্রিফিং পাবেন বাইডেন। ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিয়মিত গোয়েন্দা ব্রিফিং পাওয়ার অর্থ হচ্ছে এখন থেকে বড় ধরনের জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বাইডেনকে অবহিত করবেন মার্কিন গোয়েন্দারা। দুনিয়ার যে কোন প্রান্ত থেকে আসা হুমকির বিষয়ে তাকে জানানো হবে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের একটি টিম এসব গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকেন। ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে নিজের বাড়ি এবং স্থানীয় একটি থিয়েটার থেকে আপাতত হোয়াইট হাউসে নিজের আসন্ন টিম গোছানোর কাজ করছেন বাইডেন। প্রথমে কখন ও কোথায় তিনি গোয়েন্দা ব্রিফিং নেবেন; সেটি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বাইডেন এখন প্রতিদিন আন্তর্জাতিক হুমকি এবং নানা বিষয়ে তথ্যের পাশাপাশি সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং দায়িত্বভার গ্রহণের প্রস্তুতির জন্য লাখ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল পাবেন। এরইমধ্যে নিজ মন্ত্রিসভার শীর্ষস্থানীয় ছয় সদস্যের নাম ঘোষণা করেছেন বাইডেন। বাইডেনের নতুন ঘোষিত নিয়োগ অনুমোদন পেলে এভ্রিল হাইনেস হবেন যুক্তরাষ্ট্র্র্র্র্র্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রথম নারী পরিচালক। আলেহান্দ্রো মায়োর্কাস হবেন প্রথম ল্যাটিনো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রধান। ফ্লিনকে ক্ষমা ঘোষণা করছেন ট্রাম্প ॥ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে ক্ষমা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিজেই তার এমন মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের তদন্তে এফবিআইকে মিথ্যা বলার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন ফ্লিন। ২০১৭ সালে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছিলেন ট্র্র্রাম্পের সাবেক এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় এমনিতেই হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দিন ঘনিয়ে এসেছে। নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শপথ নেয়ার কথা রয়েছে। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা ঘোষণা করতে হলে এই সময়সীমার মধ্যেই করতে হবে। ফ্লিন শেষ পর্যন্ত ক্ষমা পেলে এটিই হবে ট্রাম্পের ক্ষমা পাওয়া সর্বোচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি। বাইডেনকে আমন্ত্রণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ॥ নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সোমবার এক ফোনালাপে তাকে এ আমন্ত্রণ জানান ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল। আগামী বছর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। টুইটারে দেয়া এক পোস্টে চার্লস মাইকেল নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। টুইটারে দেয়া পোস্টে চার্লস মাইকেল বলেন, মাত্রই নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে আগামী বছর ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কোভিড-১৯, জলবায়ু, নিরাপত্তা ও বহুপাক্ষিকতা নিয়ে একযোগে কাজ করার সময় এসেছে। আসুন ফের একটি শক্তিশালী ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র জোট গড়ে তুলি। হোয়াইট হাউসে বিদায়ের সুর ॥ গত চার বছর হোয়াইট হাউস থেকেই নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রকে মাতিয়ে রেখেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যমে গত চার বছরে এমন কম দিনই গেছে, যেদিন সংবাদের শিরোনামে ছিলেন না ট্রাম্প। এখন তার ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পালা। তাই বিদায়ের করুণ আবহাওয়া বিরাজ করছে হোয়াইট হাউসে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে হোয়াইট হাউসে কোন চাঞ্চল্য নেই। অনেকটাই শান্ত হয়ে পড়েছে ওয়েস্ট উইং নামে হোয়াইট হাউসের এলাকাটি। প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এক প্রতিবেদনে বলেছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরেও নীরবতা বিরাজ করছে। থ্যাংকস গিভিং উপলক্ষে অনেক কর্মী প্রচার শিবির ছেড়ে গেছেন। এসব কর্মীরা জানেন, শীঘ্রই তাদের অন্য কোন কাজ খুঁজে নিতে হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বিপক্ষে যেতে শুরু করলে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার অফিস থেকে প্রেস ব্রিফিং কমতে শুরু করলেও ট্রাম্পের টুইট বার্তা অব্যাহত থাকে। তার মুখপাত্র হয়ে ওঠেন আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি। টুইট বার্তায় ট্রাম্প জানাতে থাকেন, নির্বাচনে তার পরাজয় হয়নি। জালিয়াতি হয়েছে। ট্রাম্পের প্রচার মুখপাত্র টিম মুর্তোফ বা বিল স্টিফেনকে এখন টুইটারেও অনুপস্থিত দেখা যাচ্ছে। সবাই ছেড়ে যাওয়ার পর অনেকটাই একা হয়ে পড়ছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মধ্যেও কোন চাঞ্চল্য নেই। প্রেস রুম থেকে পুরো ওয়েস্ট উইংয়ে বিরাজ করছে নীরবতা। ট্রাম্পের এক সময়ের বেসরকারী অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্টিফেন মোর বলেছেন, সব জানালা বন্ধ হয়ে পড়ছে। নিজেকে একা করে ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ভিত্তিকেও নড়বড়ে করে দিচ্ছেন। রিপাবলিকান দলের জাতীয় কমিটির চেয়ারপার্সন রনা ম্যাকডানিয়েল বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কখনও লড়াই ছেড়ে দেবেন না। তবে সবকিছু যথাযথ নিয়মে পরিচালনার পথ বাধাগ্রস্ত করবেন না। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহলের বরাত দিয়ে পলিটিকো বলেছে, ট্রাম্প সবাইকে দেখাচ্ছেন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও তার এক পা এখন দরজার বাইরে। আড়ালে নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার কাজও সারছেন তিনি। নিজের সমর্থকদের নিয়ে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ার কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। পরের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্যও মনস্থির করছেন। পাশাপাশি ট্রাম্প ২০ জানুয়ারির পর নিজের মিডিয়া কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন এমন কথাও বলা হচ্ছে। এর মধ্যে ট্রাম্পের পরিবারের কেউ কেউ পুরনো দিনের সুখকর স্মৃতি রোমন্থন শুরু করে দিয়েছেন। ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প তার স্বামী জ্যারেড কুশনারসহ অন্যদের পুরনো ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, উৎসবের এ মৌসুমে পুরনো ছবিগুলো হোয়াইট হাউসের নানা স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে চলচিত্র হয়েছে। হোয়াইট হাউস নিয়েও নির্মিত হয়েছে অর্ধ শতাধিক সিনেমা ও টিভি সিরিজ। হোয়াইট হাউসের প্রশাসনিক এলাকা ওয়েস্ট উইং নামে পরিচিত। এ নামে বিখ্যাত টিভি সিরিয়াল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এনবিসি চ্যানেলে। ট্রাম্পের পুরো সময় নিয়ে সিনেমা হবে-টিভি সিরিয়াল হবে এসবের শেষ দৃশ্যপট কেমন হবে তার আগাম অনুমানের জন্য ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আপাতত অপেক্ষা করতে হবে।
×