ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নেটওয়ার্কে সচল অর্থনীতি

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ২৫ নভেম্বর ২০২০

নেটওয়ার্কে সচল অর্থনীতি

রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিন জেলায় তিনটি সেতু এবং পাবনায় একটি স্বাধীনতা চত্বরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী করোনাকালে দেশের অথনীতির চাকা সচল থাকার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার ‘ব্যাপক নেটওয়ার্ক’ গড়ে তুলেছে বলেই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর সারাদেশে যোগাযোগের একটা ব্যাপক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি। এর ফলে আজকে আমাদের অর্থনীতির চাকা অনেক সচল এবং এই করোনাকালেও অর্থনীতির চাকা অনেক সচল রয়েছে। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে কোন ম্যাজিক নেই, এটা হচ্ছে একটা রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। সাধারণ মানুষ, দরিদ্র মানুষ, তৃণমূল পর্যায়ের অবহেলিত মানুষ- সেই মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন করাই হলো আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেই আজকের বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দেশবাসী জানে সরকারের অর্থ বরাদ্দ তখনই অর্থব্যঞ্জক হয়ে ওঠে যখন মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন। এজন্য সততা, দক্ষতা ও অঙ্গীকারের প্রতি একনিষ্ঠ থাকার কোন বিকল্প নেই। মানুষের প্রত্যাশা, দায়িত্বশীল সরকার সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় অতীতের মতোই সর্বত্র আস্থার স্বাক্ষর রাখবে এবং সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। মানবসমাজের ওপর মহামারীর প্রভাব হয় সুদূরপ্রসারী। মানবকুলের একটা সামান্য অংশ মহামারীর কবলে পড়ে মৃত্যুবরণ করে। এটি এড়ানো অসম্ভব হয়ে ওঠে। জীবিত বৃহত্তর অংশকে নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয় টিকে থাকার জন্য। অর্থনীতির বিচারে বর্তমান সভ্যতায় সব রাষ্ট্র সমপর্যায়ের নয়। সম্পদ অনুযায়ী জনসংখ্যায়ও রয়েছে ভিন্নতা। তাই বৃহত্তর বিচারে মানবজাতি অভিন্ন হলেও দেশে দেশে ভিন্ন কৌশল অবলম্বনের প্রয়োজন পড়ে। মহামারীর কবল থেকে প্রথমত জীবন রক্ষাই সবচেয়ে বড় অঙ্গীকার। এর পরই হলো অর্থনীতির মেরামত ও তাকে পুনরুজ্জীবন দান। বাংলাদেশের আয়তন ও সম্পদ অনুযায়ী নাগরিকের সংখ্যা বেশি। যাবতীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার তাই অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সরকার জনকল্যাণমুখী বলেই আমরা চলমান করোনা মহামারীর একেবারে শুরু থেকেই দেখে আসছি সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার একের পর এক বাস্তবমুখী উদ্যোগ নিয়েছে। করোনার মতো অদৃশ্য দানবের সঙ্গে লড়াই করতে হলে চাই সঠিক পরিকল্পনা ও সাহসী উদ্যোগ। এ লক্ষ্যে প্রয়োজন যথাযথ অর্থ বরাদ্দ। সরকার সেই কাজটিই করছে দক্ষতার সঙ্গে। করোনা মোকাবেলায় চারটি কৌশল হচ্ছে- সরকারী ব্যয়ের ক্ষেত্রে কর্মসৃজনকে প্রাধান্য ও বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত, ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রবর্তন, যাতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত হয় এবং দেশে-বিদেশে উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তৃতীয় কৌশলটির উদ্দেশ্য হতদরিদ্র ও কর্মহীন হয়ে পড়া জনগণকে সুরক্ষা দেয়া এবং বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা। তবে এ কৌশলটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করা দরকার, যাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। দেশের মানুষ আশাবাদী যে, উত্তরোত্তর নেটওয়ার্ক বাড়ানোর মধ্য দিয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়েও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকবে।
×