ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের বিরুদ্ধে দুই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ২৪ নভেম্বর ২০২০

পুলিশের বিরুদ্ধে দুই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ জেলার আশাশুনিতে পুলিশের বিরুদ্ধে দুই মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আত্মহত্যার ঘোষণাও দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র সরকার। সোমবার আশাশুনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত মানিক চন্দ্র ম-লের পুত্র মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র ম-ল লিখিত ও মৌখিকভাবে এই অভিযোগ তুলে ধরেন। এই অপমান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্য অতীব দুঃখজনক এবং আত্মহত্যার শামিল উল্লেখ করে তিনি ওই পুলিশ কোন পরিবার থেকে এসেছে, কার ইন্ধনে এসব কথা বলেছে, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে তিনি বলেন, রবিবার সকালে গ্রাম থেকে আশাশুনিতে যাওয়ার সময় আশাশুনি বাইপাস হাইওয়ে ৩ রাস্তার পাশে (দক্ষিণে) এসআই জুয়েল তাকে গাড়ি থামাতে বলে। তার নির্দেশ মতো গাড়ি থামালে কনস্টেবল সোহাগ তাকে বলে ‘এই (অশ্রাব্য শব্দ) লাইট লাগাইছ কেন?’ তখন তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে বলেন, কাকা আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাছাড়া আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করে। এই বলে তিনি পুলিশ কনস্টেবলকে ভদ্রভাবে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। তখন সে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে বলে ওই পরিচয় বাদ দে! বুকের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার মনোগ্রাম দেখে অশ্রাব্য শব্দ বলে, ওইসব লাগাইছ কেন। ওসব খুলে ফেল। এই বলে গাড়ির লাইটটা প্লাস দিয়ে কেটে নেয়। পরে হর্ন কাটার জন্য প্লাস বের করে একটি হর্ন কাটতে গেলে তিনি (মুক্তিযোদ্ধা) বাধা দেন। সে বলে দুটি হর্ন রাখা যাবে না। মুক্তিযোদ্ধা তখন বলেন, ৮০ সিসি চায়না গাড়িতে কোম্পানি দুটি হর্ন লাগিয়ে দিয়েছে। এটা আপনি কাটবেন কেন? বলে ঘটনাটি এসপিকে বলবেন বলে জানান। তখন ওই পুলিশ সদস্য তার পরিহিত পেন্টের চেন খুলে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে বলে আমার (প্রকাশ উপযোগী নয় এমন শব্দ) ছিঁড়ে নিস। এ সময় সেখানে শতাধিক পথচারী উপস্থিত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুধু এই ঘটনা তার সঙ্গে ঘটেনি। এর আগে অপর এক মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীকেও একইভাবে অপমান করা হয়েছে বলে তিনি জানতে পারেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীর গাড়ির সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত স্টিকার ছিঁড়ে ফেলে দিতে উদ্যত হয় ওই পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ। তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বিষের বোতল হাতে নিয়ে বলেন, এই অপমান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্যে অতীব দুঃখজনক এবং আত্মহত্যার শামিল। এ বিষয়ে সঠিক বিচার না পেলে তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন বলে ঘোষণা দেন। এ ঘটনায় তিনিসহ মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজী বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মৌখিকভাবে থানা অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী গাজী, আব্দুর করিম, কার্তিক চন্দ্র ম-ল, মাস্টার আকবর আলীসহ অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।
×