ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সতর্কতামূলক প্রচারে জোর দিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ২৩ নভেম্বর ২০২০

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সতর্কতামূলক প্রচারে জোর দিচ্ছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে সরকার। নিজেদের সক্ষমতা নির্ণয়ের পাশাপাশি সতর্কতামূলক প্রচারে জোর দিচ্ছে সরকার। গণপরিবহন থেকে শুরু করে সর্বত্র যেন মাস্ক ব্যবহার করা হয়, সেজন্য সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয় এই প্রচারে জোর তাগিদ দিচ্ছে। গত সাত মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে করোনায় দৈনিক রোগী শনাক্ত, শনাক্তের হার ও মৃতের সংখ্যা ওঠানামা করছে। খুব বেশি বাড়েও না, কমেও না। এর মধ্যে গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা, আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর হার একটু একটু করে কমে আসছিল। যদিও নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণ শনাক্তের হার কখনই দশ শতাংশের নিচে নামেনি। কিন্তু হঠাৎ করে এক সপ্তাহ ধরে দেশের করোনা পরিস্থিতির বেশ অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ওঠানামার মধ্যেও কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে করোনায় শনাক্তের হার বেড়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার নির্দেশনা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সরকার। বাংলাদেশে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরকার বলে আসছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ শীতে বাড়বে। সেজন্য কয়েকবার প্রস্তুতি নেয়ার তাগিদও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সতর্কতা ছাড়াও মহামারী নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটি এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারাও কয়েকবারই পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুতির কথা বলেছেন। যে কারণে এ সপ্তাহে যখন সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পেল, সবাই একে দ্বিতীয় ধাপের সঙ্গে মেলাতে শুরু করেছেন। দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকানোর কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ইতোমধ্যে মাঠ প্রশাসনকে সচেতনতামূলক প্রচার এবং জনগণকে মাস্ক পরতে জোর দিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ বাস্তবায়নের জন্য সচিবালয়সহ সরকারী দফতরগুলোতে পোস্টার/ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। মাস্ক পরায় উৎসাহিত করছেন কর্মকর্তারা। গণপরিবহনে যাতে সবাই মাস্ক পরে সেজন্য তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের বিআরটিএ থেকে যখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় তখন দেখা হয়- সবাই মাস্ক পরছেন কিনা। চালক, হেলপার, যাত্রীরা ঠিকমতো মাস্ক পরেছেন কিনা, দেখা যায় কেউ কেউ মাস্ক পকেটে রাখেন। যখন অভিযান চালানো হয় তখন পকেট থেকে বের করে মাস্ক পরেন। এটার জন্য সবার সচেতনতা দরকার। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আরও বলেন, আমাদের দিক থেকে প্রচার আছে। আমরা বার বার বলছি মাস্ক পরার জন্য। মাস্ক না পরলে সেবা দেয়া হবে না, এমন সিদ্ধান্ত সরকারেরও আছে। সে অনুযায়ী আমরা কার্যক্রম নিয়েছি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে তৎপরতা আছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্প্রতি আমাদের নিয়ে মিটিং করেছেন। সেখানে সচেতনতার বিষয়টি বড় করে এসেছে। সবার স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে, এটা তো ভয় থাকা দরকার। এ নিয়ে আমরা কাজ করছি। অন্যদিকে কোভিড-১৯ ’র সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা, প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক প্রচার সম্পর্কে অনলাইনে এক সভা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
×