ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের মাধ্যমেই ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্ভব ॥ ড. সিরাজুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ২৩ নভেম্বর ২০২০

সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের মাধ্যমেই ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্ভব ॥ ড. সিরাজুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুধু আইনের শাসন নয়, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের মাধ্যমেই ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্ভব। মৃত্যুদণ্ডের ভয়েও ধর্ষক সংযত হচ্ছে না। আইন করার পরও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। শিশু ধর্ষণ চলছে, ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। ধর্ষণ প্রতিরোধের মূল দায়িত্ব রাষ্ট্রের হলেও এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলের দায়িত্ব রয়েছে। রবিবার জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) ‘ধর্ষণ প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে’ ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, আইনের শাসনের পাশাপাশি জবাবদিহিতাও প্রয়োজন। কারণ জবাবদিহিতা থাকলে আইনও বদল হবে। আসল কথাটি হচ্ছে জনমত। ভরসা সংসদ বা সরকারে নয়। ভরসা হচ্ছে সেই জনমত। যে জনমত সংসদ ও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। সেক্ষেত্রে মিডিয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আজ মিডিয়া যত শক্তিশালী, অতীতে কখনও মিডিয়া এত শক্তিশালী ছিল না। মিডিয়া এই খবরগুলো তুলে ধরে জনমত গঠনে সহায়তা করছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন কোন ছাত্র সংসদ নেই। সাংস্কৃতিক চর্চা নেই, কোন বিতর্ক নেই, খেলাধুলা নেই। সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতাসহ মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে আমাদের ধর্ষণ নামক মহামারী প্রতিরোধ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার, যৌতুক, নারীর ক্ষমতার অপর্যাপ্ততা, মূল্যবোধের অভাব, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের দায়িত্ববোধের অভাব ধর্ষণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হলেও নানা কারণে ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হবে। সাক্ষ্য আইনের ত্রুটি বিচ্যুতি, ফরেনসিক রিপোর্টের দুর্বলতা, বাদীর আর্থিক সীমাবদ্ধতা, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ধর্ষণের শাস্তি প্রমাণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিযোগিতায় তেজগাঁও কলেজকে পরাজিত করে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন, সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি এবং সাংবাদিক সাজেদা পারভিন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
×