স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপ মাঠে গড়াতে আর মাত্র একদিন বাকি। উদ্বোধনী ম্যাচেই বেক্সিমকো ঢাকার বিরুদ্ধে মাঠে নামবে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। কিন্তু সেই ম্যাচেই অনিশ্চিত এখন রাজশাহীর অন্যতম ভরসা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলগত অনুশীলনে রবিবার সকালে মিরপুর জাতীয় একাডেমি মাঠে ফুটবল অনুশীলনের সময় গোড়ালিতে চোট পান এই পেস অলরাউন্ডার। ক্র্যাচে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়ার পর আজ জানা যাবে তার ইনজুরি পরিস্থিতি। তবে মঙ্গলবার দলের উদ্বোধনী ম্যাচেই তার না খেলার সম্ভাবনা প্রবল। আপাতত তিনি আছেন পর্যবেক্ষণে। বিষয়গুলো জানিয়েছেন মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী দলের ম্যানেজার হান্নান সরকার।
বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপের প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে শীর্ষ ক্যাটাগোরির কোন ক্রিকেটারকে দলে ভেড়ায়নি রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি। তরুণ কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ আশরাফুল আর ফরহাদ রেজাকে নিয়ে দল গড়ে তারা। দলটির নেতৃত্বেও আছেন তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বল্প পরিসরের ফরমেটে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত ও অপরিহার্য ক্রিকেটার সাইফউদ্দিনকে দলে নিয়েছে তারা। নিশ্চিতভাবেই দলটির সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তিনি ব্যাটে-বলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন ভালমানের অলরাউন্ডার হিসেবে। তাছাড়া তিনি বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ৭ মাস বিরতির পর হওয়া ৩ দলের বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ওয়ানডে সিরিজেও দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপে তাই সবার নজর ছিল তারদিকে। দলের সঙ্গে প্রস্তুতি শুরুর আগেই নিয়মিত ঐচ্ছিক অনুশীলন চালিয়ে গেছেন তিনি। আর শনিবার দলগত অনুশীলন শুরু করেন। সেখানেই ফুটবল খেলতে নেমে গোড়ালিতে চোট পেয়ে ক্রাচে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়েন সাইফউদ্দিন। এ বিষয়ে দলটির ম্যানেজার হান্নান সরকার বলেন, ‘সাইফউদ্দিনের ইনজুরির মাত্রা কেমন সেটা বোঝার চেষ্টা করছেন দলের ফিজিও এবং বিসিবির চিকিৎসকরা। তিনি এখন দলের ফিজিও এবং বিসিবির চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে আছেন। বিসিবির মেডিক্যাল প্রটোকল অনুযায়ী এখন তার চিকিৎসা চলবে।’
ক্রিকেটারদের অনুশীলনের অন্যতম একটি মাধ্যম ফুটবল। গা গরম করা, শরীরের জড়তা কাটানো, হাত-পায়ের অবসন্নতা কাটাতে এর দারুণ উপযোগিতা রয়েছে। তাছাড়া কঠোর ক্রিকেটীয় অনুশীলনের পর ফুটবল খেলে ক্রিকেটাররা কিছুটা স্বস্তি ও আরাম অনুভব করেন। তাই বড় বড় দলগুলো অনুশীলনে ফুটবল খেলে থাকে। কিন্তু এতে অনেক ক্রিকেটারই বড় ইনজুরিতে পড়েছেন অতীতে। তাই অনেক দেশের ক্রিকেট বোর্ডই অনুশীলনে ফুটবল নিষিদ্ধ করেছে। বছরের শুরুতে ফুটবল খেলতে গিয়ে ওপেনার রোরি বার্নস লিগামেন্টে চোট পান, এরপর ইংল্যান্ড অনুশীলনে ফুটবল নিষিদ্ধ করে। ম্যাচের আগে অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট পাওয়ায় রোহিত শর্মাকে টেস্ট অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় সাড়ে ৩ বছর। ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপ সেমিতে নামার ২ ঘণ্টা আগে যুবরাজ সিং এভাবে চোট পেয়ে খেলতে পারেননি। অথচ ২০০৩ সালে ভারতের সাবেক কোচ জন রাইট অনুশীলনে ফুটবল নিষিদ্ধ করেছিলেন। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার নাসির হোসেন বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং ৬ মাস মাঠের বাইরে ছিলেন অস্ত্রোপচার করিয়ে। মুশফিকুর রহিমও একই সময় ফুটবল অনুশীলনে চোট পেয়ে ৩ সপ্তাহ মাঠের বাইরে ছিলেন। এসব কারণে দেড় বছর আগে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেছিলেন, অনুশীলনে ফুটবল খেলার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আনা হবে। কিন্তু জাতীয় দলের ট্রেনার নিকোলাস ট্রেভর লি অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেটারদের ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: