ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ॥ কাল থেকে তাপমাত্রা আরও কমবে

প্রকাশিত: ০০:৪১, ২২ নভেম্বর ২০২০

বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ॥ কাল থেকে তাপমাত্রা আরও কমবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুক্রবার থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত। শনিবারও কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের মনে এখন একটি প্রশ্ন, শীত বুঝি এসেই গেল? তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে বৃষ্টির কারণে শীতের অনূভুতি কয়দিন বাড়বে। সামনেই যেহেতু শীতকাল তাই আস্তে আস্তে এখন প্রকৃতিতে শীতও নেমে আসবে। তারা জানায়, মেঘ কেটে গেলেই উত্তরের শীতল হাওয়া প্রবেশ করতে পারে প্রকৃতিতে। সোমবার থেকে রাতের তাপমাত্রা আরও কমে শীতের অনূভূতি আরও বাড়াবে। বৃষ্টি এবং মেঘলা আবহাওয়ার কারণে ইতোমধ্যে সারাদেশেই তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রী নিচে নেমে গেছে। শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। কোথাও রোদের দেখা মেলেনি। এদিন চট্টগ্রামসহ কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আজ রবিবার থেকে মেঘ কেটে রোদেলা আবহাওয়া দেখা দিতে পারে। তবে সোমবার থেকেই আবহাওয়া স্বাভাবিক হবে। স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতে শীত ভাব বেড়ে যাবে। এর পর তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও শীতের অনুভূতি কমবে না। প্রকৃতিতে এখন চলছে অগ্রহায়ণ মাস। এই মাসেই বাংলা নবান্ন শুরু হয়। নরম আবহাওয়ায় কৃষক এখন ধান কাটতে ব্যস্ত। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঋতু বৈচিত্র্যের ধরন অনুযায়ী নবেম্বরের শেষেই প্রকৃতিতে হিম হিম ভাব নেমে আসে। এই সময়ে উত্তরের হাওয়া না বইলেও সন্ধ্যারাতে কুয়াশা ঝড়ে। এর মধ্যে যদি ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয় তাহলে ঠাণ্ডার অনুভূতি বাড়িয়ে দেবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সোমবার থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আগামী তিনদিন রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে আসবে। নবেম্বরের শেষদিকে দিনে শীতের ভাব বিরাজ করবে। গত শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হঠাৎ বৃষ্টিপাত আবহাওয়ার ধরন অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে। ওইদিন খুলনা, বরিশালের কিছু স্থানে হাল্কা বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এসময় ঢাকায় তিন মিলিমিটার ও ফরিদপুরে ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর আকাশ মেঘলা থাকলেও সন্ধ্যা নাগাদ বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তবে চট্টগ্রামসহ অন্য এলাকায় সামান্য বৃষ্টির দেখা মিলেছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, সাগরে সক্রিয় মৌসুমি লঘুচাপের সঙ্গে পুবালি হাওয়ার সংমিশ্রণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে হালকা বৃষ্টি কেটে রোদেলা আবহাওয়ার দেখা মিলবে শীঘ্রই। শুষ্ক আবহাওয়ায় রাতের তাপমাত্রা কমে শীতের অনুভূতি বাড়ার সঙ্গে মধ্যরাত থেকে কুয়াশার দাপট বাড়াবে এই সময় থেকে। তারা জানায়, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, আজ থেকে রোদেলা আবহাওয়ার দেখা মিলবে। কাল সোমবার থেকে টানা কয়েকদিন শীতের অনুভূতি বাড়বে। কারণ এ সময়ে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে। তবে সার্বিকভাবে বা পুরোপুরি কবে থেকে শীত নামতে পারে প্রকৃতিতে? এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদরা জানান, শীত কবে আসবে এর জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না। অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে নামতে শুরু করবে। মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেই উত্তুরে হাওয়া প্রকৃতিতে চলে আসতে পারে। আর উত্তরের হাওয়া প্রকৃতিতে প্রবেশ করলেই শীত শুরু হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে বেশ শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে। প্রায় প্রত্যেকদিনই তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে যাচ্ছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত তা ১৫ ডিগ্রীতে নেমে আসে। এর আগে বেশ কয়েকদিন আরও নেমে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌঁছায়। এদিকে বৃষ্টির কারণে ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগেই কমবেশি তাপমাত্রার পারদ নেমে গেছে। ফলে এসব এলাকায় বৃষ্টির কারণে শীত বাড়ছে। শনিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ ২৮.১ এবং সর্বনিম্ন ২১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিকে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ২৮.৯ এবং সর্বনিম্ন ১৬.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেটে ছিল ২৭.৬ ডিগ্রী এবং সর্বনিম্ন ১৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ময়মনসিংহে আরও কমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে ২৬. ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। রাজশাহীতে ২৮.৮ এবং সর্বনিম্ন ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস, রংপুরে ২৬.৮ এবং সর্বনিম্ন ১৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস, খুলনায় সর্বোচ্চ ৩০.১ এবং সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং বরিশালে তা রের্কড হয় ২৮.৮ এবং সর্বনিম্ন ২১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে শুধু বাংলাদেশ নয় পার্শ্ববর্তী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শীত নেমে গেছে। বিশেষ করে ভারতের রাজধানী দিল্লীতে ইতোমধ্যে হাড় কাঁপানো শীত শুরু হয়েছে। এর ঢেউ বাংলায় লাগার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই আবহাওয়বিদরা জানান নবেম্বরের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
×