ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ বারে ৬শ’ ৮০ দিন বিদেশ ভ্রমণ করে বিপুল অর্থের অপচয়

বার্ড পরিচালকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১৯ নভেম্বর ২০২০

বার্ড পরিচালকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ১৮ নবেম্বর ॥ বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে। সরকার নির্ধারিত চাকরির বয়সসীমা ২৭ বছর হলেও তার চেয়ে প্রায় ১০ মাস বেশি বয়সী ব্যক্তিকে চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, চাকরি চলাকালীন উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে একই প্রশিক্ষণে পর পর দুইবারসহ ১৬ বার বিদেশ ভ্রমণের নামে অর্থের অপচয় করার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। জানা গেছে, বিগত ১৯৮৮ সালের ১৭ জুন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বার্ডে সহকারী পরিচালকের সাতটি পদসহ বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর বয়স অনুর্ধ ২৭ বছর চাওয়া হয় এবং বিশেষ যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিভাগীয় প্রর্থীদের বেলায় বয়সসীমা শিথিলযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়। সহকারী পরিচালকের ৭টি পদে ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন যোগাযোগ, জনতত্ব, কমিউনিটি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি প্রযুক্তি ও প্রকল্প বিভাগে লিখিত পরীক্ষায় ১১৭ জন অংশ নিয়ে ৬৩ জন উত্তীর্ণ হয় এবং ৬০ জন সাক্ষাতকার বোর্ডে উপস্থিত হয়। সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মকসুদ আলীর ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান সহকারী পরিচালক (কৃষি সম্প্রসারণ) ও সহকারী পরিচালক প্রকল্প দুটি পদে আবেদন করেন বয়সসীমা সাতাশ বছরের বেশি হওয়ার কারণে তার একটি আবেদন বাদ পড়ে। কিন্তু একই পদে অন্য একটি আবেদনে তার বয়স ‘সাতাশ বছর নয় মাস নয় দিন’ হলেও বিভাগীয় প্রার্থী না হয়েও তিনি রহস্যজনকভাবে চাকরি পেয়ে যান এবং ১৯৮৮ সালে ১৪ নবেম্বর নিয়োগবিধি শর্ত ভঙ্গ করে ‘৯ মাস ৯ দিন বেশি’ বয়সে তিনি সহকারী পরিচালক (প্রকল্প) পদে বার্ডের চাকরিতে যোগদান করেন। সহকারী পরিচালক (প্রকল্প) পদে ওই সময় মিজানুর রহমানের সঙ্গে লিখিত পরীক্ষায় ২১ জন অংশ নিয়ে ১০ জন উত্তীর্ণ এবং ৯ জন সাক্ষাতকার বোর্ডে উপস্থিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে মিজানুর রহমান সহকারী পরিচালক (প্রকল্প) পদ থেকে পরিচালক (প্রকল্প) পদে পদোন্নতি পান। সূত্র আরও জানায়, মিজানুর রহমান চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার সময় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হলে তিনি সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেন। এছাড়া চাকরি চলাকালীন মিজানুর রহমান তার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ১৬ বার বিদেশে ভ্রমণ করে ৬৮০ দিন যুক্তরাজ্য, জাপান, নেপাল, ফিলিপিন্স, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি ভূতথ্য সংক্রান্ত (জিও-ইনফরমেটিক্স) নামীয় একই প্রশিক্ষণে ২০১৩ সালে একবার এবং ২০১৬ সালে আর একবার দুইবার ভারতে যান। সূত্রমতে, তার এই ঘন ঘন দীর্ঘমেয়াদী বিদেশে সফরে মোটা অঙ্কের অর্থের অপচয় ঘটে। তার বিরুদ্ধে বার্ড কর্মকর্তা কর্মচারী সমিতির গিফ্ট বক্স কেনার নামে সমিতির মোটা অঙ্কের অর্থের ক্ষতি সাধনেরও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মিজানুর রহমানের বক্তব্য নেয়ার জন্য বুধবার তার মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তিনি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
×