ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইটভাঁটিতে কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল শিশু

প্রকাশিত: ২১:১৪, ১৮ নভেম্বর ২০২০

ইটভাঁটিতে কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল শিশু

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরা থেকে কুমিল্লায় ইটভাঁটিতে কাজ করতে নিয়ে যাওয়া দশ বছরের শিশু জাহিদুল লাশ হয়ে ফিরল। কাজ করতে নিয়ে যাওয়া শ্রমিক সর্দার রবিউল ইসলামের দাবি মোটরের তারে জড়িয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে তার মৃত্যু হয়। তবে নিহতের পরিবারের দাবি কষ্টের কাজ করতে না পেরে বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর গ্রামের বাগ্তিবন্ধী হাজের আলীর একমাত্র পুত্র জাহিদুলের লাশ মঙ্গলবার সকালে তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার রামনগর ইউনিয়নের এমএসডি নামীয় ইটের ভাঁটিতে সোমবার জাহিদুলের মৃত্যু হয়। স্থানীয় আকবর আলী ও আব্দুল হকসহ কয়েকজন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জাহিদুলের পরিবারকে তার মৃত্যুর সংবাদ জানায় শ্রমিক সর্দার একই গ্রামের রবিউল ইসলাম। মাটি ভেজানোর কাজে ব্যবহৃত মোটরের তারে জড়িয়ে জাহিদুল মারা যায় বলেও নিশ্চিত করা হয়। তবে সকালের দিকে জাহিদুল সেখানে মারামারি করে আহত হয়েছে বলে জানানো হয় বলেও তারা দাবি করেন। স্থানীয়রা জানান জাহিদুল ইসলামের পিতা হামজার আলী বাগপ্রতিবন্ধী এবং মানসিকভাবে পুরোপুরি ভারসাম্যহীন। এছাড়া তার মা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হওয়ায় তারা ভিক্ষা করে সংসার নির্বাহ করেন। স্থানীয়দের দাবি পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে এ বছর স্থানীয় শ্রমিক সর্দার রবিউল ইসলাম প্রতিবেশীর পুত্র জাহিদুলকে কুমিল্লার রামনগর এলাকার একটি ইটের ভাঁটিতে নিয়ে যায়। ভাটায় নেয়ার পূর্বে জাহিদুলের পরিবারকে শ্রমিক সর্দার অগ্রিম কিছু টাকাও দেন। স্থানীয় অপর একটি সূত্রের দাবি জাহিদুল ভাঁটিতে কাজ করতে গেলেও কঠোর পরিশ্রম করতে না পেরে বাড়িতে ফেরার বায়না ধরে জাহিদুল। মাত্র দুই সপ্তাহ না যেতেই জাহিদুল বার বার দলনেতার মাধ্যমে শ্রমিক সর্দারের কাছে বাড়ি ফেরার জন্য বায়না ধরে। এক পর্যায়ে সোমবার দুপুরে তার মৃত্যুর সংবাদ পরিবারকে জানানো হয়। জাহিদুল ইসলামের খালা সফুরুন্নেছা বেগম জানান, তার বোন ও ভগ্নিপতি প্রতিবন্ধী। ভিক্ষা করেও সংসার না চালাতে পারায় রবিউলের পরামর্শে জাহিদুলকে ভাঁটিতে কাজে পাঠানো হয়। তিনি দাবি করেন সোমবার সকালে বাড়িতে ফোন করে জাহিদুলকে ফেরানোর বিনিময়ে অগ্রিম দেয়া টাকা ফেরত চায় শ্রমিক সর্দার। তার বোনের শিশু পুত্রের মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করার দাবি জানান সফুরুন্নেছা।
×