সংসদ রিপোর্টার ॥ দ্রুত সময়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার পদ্ধতি দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক। সরকার কোভিড পরীক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এ সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য আধুনিক ও দ্রুত সময়ে পরীক্ষার পদ্ধতি দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কম হওয়ার কারণে দেশের মানুষ বেশি বেশি পরীক্ষা করতে চাচ্ছে না। এ কারণে দেশে সর্বোচ্চ সক্ষমতার চেয়েও দৈনিক কম সংখ্যক নমুন সংগৃহীত হচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও যুগোপযোগী নেতৃত্বে বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মতো বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশে সংক্রমণ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১১৫টি পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এসব ল্যাবে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ হাজার পিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব। প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো যেতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৩ থেকে ১৫ হাজার পরীক্ষা সম্পন্ন হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ পরীক্ষার হার দৈনিক চাহিদার ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে দেশের উপসর্গ ও উপসর্গহীন যে কোন নাগরিক ও দেশে অবস্থানকারী বিদেশী নাগরিকদের চাহিদামাত্র কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে পারেন। পরীক্ষার হার বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার সব রকমের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
দেশে ১১ হাজার চিকিৎসক পদ শূন্য ॥ সরকারী দলের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সারাদেশে চিকিৎসকের ১১ হাজার ৩৬৪টি পদ শূন্য রয়েছে। ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে ২৯০ জন, ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২৬০ জন, ৪১তম বিসিএসের মাধ্যমে ১০০ জন এবং ৪২তম বিসিএসের মাধ্যমে ২ হাজার চিকিৎসকের শূন্যপদ পূরণের কার্যক্রম চলমান আছে।
সরকারী দলের হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের লিখিত হবাবে মন্ত্রী জাহেদ মালেক জানান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে ৩৯তম বিসিএসে (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের বিশেষ ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করার জন্য সংযুক্তির মাধ্যমে পদায়ন করা হচ্ছে। উপজেলার চেয়ে নিম্ন কোন প্রতিষ্ঠানে ৩৯তম বিসিএস (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত কাউকে পদায়ন করা হচ্ছে না। তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রয়োজনে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংযুক্তির আদেশ বাতিল করে এই চিকিৎসকদের কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে পদায়ন করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা দূর করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের আলোকে দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ শৃঙ্খলামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে কোভিড-১৯ বিভিন্ন কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে ওএসডি করা হয়েছে। এছাড়া সরকারীভাবে বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
