ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এক বছর পর যুবলীগের ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ১৫ নভেম্বর ২০২০

এক বছর পর যুবলীগের ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতীয় কংগ্রেসের (সম্মেলন) প্রায় এক বছর পর ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়েছে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসা যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে গত বছরের ২৩ নবেম্বর তিন বছরের জন্য নেতৃত্বে আসেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ। তার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হন যুবলীগের ঢাকা উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল। গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যুবলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করেন। রাত ৯টায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে যুবলীগ। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৮ পদ খালি রাখা হয়েছে। ১৯৩টি পদধারীদের নাম ঘোষণা করা হয়। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২৭ প্রেসিডিয়াম সদস্যের মধ্যে ২২ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচটি পদ ফাঁকা রয়েছে। এই ২২ জনের মধ্যে মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি, শেখ ফজলে ফাহিম, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ সবই নতুন মুখ। আগের কমিটির প্রেসিডিয়ামে যারা ছিলেন তারা কেউই এবার প্রেসিডিয়ামে নেই। বর্তমান ঘোষিত কমিটির বাকি প্রেসিডিয়াম সদস্যরা বলেন, এ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, ডাঃ খালেদ শওকত আলী, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান পবণ, মোঃ নবী নেওয়াজ, আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী এমপি, মোঃ এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোয়ার্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, জুয়েল আরেং এমপি, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, এম শাহাদাত হোসনে তাসলিম। ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনেও স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম, যিনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি। তিনি এবার যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন। তার আরেক ভাই ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম এবার কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া বাকি ৪ জন হলেন, বিশ্বাস মতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মোঃ বদিউল আলম, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার। প্রেসিডিয়ামে জায়গা পাওয়া এ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ ও মনজুর আলম শাহীন আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আবু আহমেদ নাসিম পাভেল ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক। শেখ ফজলে ফাহিম ছিলেন গত কমিটির সদস্য। ড. সাজ্জাদ হায়দার চৌধুরী লিটন আগের কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। প্রেসিডিয়ামে জায়গা পাওয়া তাজউদ্দিন আহমেদ ছিলেন সহ-সম্পাদক। শেখ ফজলে নাঈম আগের কমিটির সদস্য ছিলেন। আইন বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন সুপ্রমীকোর্টের আলোচিত আইনজীবী ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে ফেসবুক লাইভ করে আলোচিত ব্যারিস্টার সুমন। কেন্দ্রীয় কমিটির ৯ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সবগুলোই নতুন মুখ। সাংগঠনিক সম্পাদকরা হলেন-কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ডাঃ হেলাল উদ্দিন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, মোঃ সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক রাসেল, মশিউর রহমান চপল, এ্যাডভোকেট মোঃ শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল কবির, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ জহিরুল ইসলাম মিল্টন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শাহদাত হোসেন, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আলী আসিফ খান রাজিব, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সরোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শামীম খান, তথ্য ও যোগাযোগ (আইটি) বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামসুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ ফরিদ রায়হান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মীর মোঃ মহিউদ্দিন, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শাহীন মালুম, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নিজামউদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হ্যারিস মিয়া শেখ সাগর, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল হাই, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মুক্তা আক্তার, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দফতর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন সাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ এনামুল হোসেন সুমন, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সায়েদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ (আইটি) বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী স্মরণ, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মাহফুজুর রহমান উজ্জল, উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোঃ মিছির আলী, উপ-জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহিম, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামসুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ফিরোজ আল-আমিন, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামিল রানা, উপ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদা, উপ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সানজিদা শারমীন। সহ সম্পাদকরা হলেন-মোঃ সাইফুল আলম সাইফুল, সাইফুল ইসলাম শাহীন পাটোয়ারী, মোঃ বেলাল হোসেন ফিরোজ, আবির মাহমুদ ইমরান, তোফাজ্জল হোসেন, মোঃ আতাউর রহমান উজ্জল, মোঃ মামুন আজাদ, মির্জা মোঃ নাসিউল আলম শুভ, মোঃ রাজু আহমেদ, গোলাম ফেরদৌস ইব্রাহীম, মোঃ মাইদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান, মোঃ আলামিনুল হক আলামিন, জামিল আহমেদ, মোঃ আব্দুল রহমান জীবন, নাজমুল হুদা ওয়ারেসি চণ্ডল, মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ আজিজুল রহমান সরকার, সামিউল আমিন, মোঃ আলমগীর হোসেন শাহ জয়, মোঃ কামরুল হাসান লিংকন, রাজীব আহমেদ তালুকদার, মোঃ বাবলুর রহমান বাবলু, এ কে এম মুক্তাদির রহমান শিমুল, হিমেলুর রহমান হিমেল, আহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি, মোঃ রাশেদুল ইসলাম সাফিন, মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ, মোঃ রায়হান রুবেল, সাইফুল ইসলাম সাইফ, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ কামরুজ্জামান, মোঃ মনিরুজ্জামান পিন্টু, মোঃ মনিরুল ইসলাম আকাশ, জিএম ওয়াহেদ পারভেজ, মোঃ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী রিগান, ডাঃ মোঃ মনজুরুল ইসলাম ভূইয়া রাফি ও মোঃ নাসির উদ্দিন মিন্টু। এছাড়া ৭৫ জন রয়েছেন নির্বাহী সদস্য। এদিকে আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ধানম-ি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে বনানী কবরস্থানে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে নিহতদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নবেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করে যুবলীগ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদলে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংগঠন। গত চার দশকের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারও নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
×