ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করুন

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ১২ নভেম্বর ২০২০

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করুন

সংসদ রিপোর্টার ॥ সরকার ও বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতা-মন্ত্রীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ইতিহাসের মহামানব ও রাজনীতির কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার বিমূর্ত কালজয়ী ও অসীম সাহসী বিচক্ষণ নেতার নাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়Ñ একটি ইতিহাস, একটি আদর্শ ও স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি। ক্ষণজন্মা এই পুরুষ ছিলেন ইতিহাসের মহামানব, রাজনীতির কবি এবং সারাবিশ্বের দুখী মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। ইতিহাসের খলনায়ক খুনী মোশতাক-জিয়ারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইতিহাসই প্রতিশোধ নেয়। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব, চির অমলিন। কোনই ষড়যন্ত্রই কৃতজ্ঞ বাঙালীর হৃদয় মণিকাঠা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের নীলনক্সাকারীদের বিচার হয়নি। তদন্ত কমিশন করে এদেরও বিচার করতে হবে। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বুধবার জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে সংসদ নেতা শেখ হাসিনার কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে বঙ্গবন্ধুকে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে আনীত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১০টা ৪০ মিনিট সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি আলোচনা শেষে সংসদ অধিবেশন আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুলতবি করেন স্পীকার। আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, এলজিআরডি মন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, হুইপ শাসমুল হক চৌধুরী, সরকারী দলের ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, নজরুল ইসলাম বাবু, মেহের আফরোজ চুমকি, নাহিদ ইজাহার খান, বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ২৩ বছরে দীর্ঘ সংগ্রাম-আত্মত্যাগের বাঙালী জাতি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ অর্জন করে। সারাজীবন এই বাঙালীর জন্য কষ্ট করেছেন, ১৩টি বছর কারাগারে থেকেছেন। নিজের জীবনের চেয়েও বাঙালীকে বেশি ভালবাসতেন। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও বাঙালী জাতির মুক্তির প্রশ্নে ছিলেন অবিচল, আপোসহীন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করেছিলেন যে ষড়যন্ত্র চলছে, জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমাকে কেউ মারবে না। এতটা বিশ্বাস ছিল দেশের মানুষের প্রতি। তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। মোশতাক-জিয়ারা এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেই ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল নিজেদের রক্ষায়। ইতিহাস বিকৃতি করে বঙ্গবন্ধুর নাম পর্যন্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করে। ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক শক্তিশালী। যতদিন বাংলাদেশ, আকাশ-বাতাস ও বাঙালী জাতি থাকবেনÑ ততদিন বঙ্গবন্ধু থাকবেন বাঙালীর হৃদয়ে। তাঁর নীতি ও আদর্শের মৃত্যু নেই, হবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় এসেছিল বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-, জেল হত্যাকা- ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে এবং হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত সোনার বাংলা তিনি গড়ে যাচ্ছেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহামানব, সারাবিশ্বের দুখী মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর হৃদয় ছিল বিশাল সমুদ্রসম। মৃত্যুর মুখোমুখি হলে মানুষ বাঁচার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৫ আগস্ট বঙ্গমাতা সিঁড়ির ওপর বঙ্গবন্ধুর লাশ দেখে খুনীদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাননি, বরং বলেছিলেন আমাকে এখানেই মেরে ফেল, আমি কোথাও যাব না। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মরণেও একসঙ্গে ছিলেন বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যেকটি পদক্ষেপই শিক্ষণীয়। তিনি বলেন, আইনের শাসনের বঙ্গবন্ধুর অগাধ বিশ্বাস। মানুষের দুর্দশা লাঘবের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত, বঙ্গবন্ধু এটা উপলব্ধি করেই সংবিধান প্রণয়নের সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার বিভাগের সেই পৃথকীকরণ ও স্বাধীনতা স্বপ্নই রয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু নিশ্চিত করেননি, মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন। তাই আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু তাঁর সম্মোহনী শক্তি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা জাতিকে জাগিয়ে তুলে আমাদের এনে দিয়েছেন রক্তিম স্বাধীন পতাকা ও স্বাধীনতা। মানুষের অধিকার ও মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর কারাগারে নির্যাতন ভোগ করেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউনেস্কোভুক্ত সকল দেশ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছে। ফলে মুজিববর্ষ আন্তর্জাতিকভাবেই পালিত হচ্ছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তির মশাল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো- এ স্লোগান দিয়ে ১৯৭০ সালে মওলানা ভাসানীরা বঙ্গবন্ধুকে নির্বাচনে না যেতে বলেছিলেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধু মওলানা ভাসানীর কথা শুনে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যদি না যেতেন তবে দেশের ইতিহাস হতো ভিন্ন। কিন্তু অত্যন্ত বিচক্ষণ ও রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু নির্বাচন যাওয়ার সিদ্ধান্তই বাঙালী জাতি পায় মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। কারণ নির্বাচনে না গেলে এবং জনগণের ম্যান্ডেট না নিলে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে দেখানো হতো। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ নেই, কিন্তু তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা পিতার আদর্শ বুকে নিয়েই সারাবিশ্বের সামনে দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। খোদ বিএনপি নেতারাও সত্য কথা স্বীকার করে বলবেন- খালেদা জিয়া নন, শেখ হাসিনাই শ্রেষ্ঠ ও বিচক্ষণ শাসক। ব্যক্তির মৃত্যু হয়, কিন্তু চেতনার মৃত্যু হয় না। খুনীদের নামের আগে কর্নেল, মেজর থাকতে পারে না। উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু বেসরকারী খাতকে সবসময় সহায়তা ও সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বেঁচে থাকলে অনেক আগেই সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠত। আজ তাঁর পথ ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশকে সারাবিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের মতো ভাষণ পৃথিবীর কোন দেশের নেতা দিতে পারেনি, এটি ছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অলিখিত ভাষণ। এটি ছিল স্বাধীনতার মূল দলিল। বঙ্গবন্ধুর মতো মানবতাবাদী ও দেশপ্রেমিক নেতা বিশ্বে খুবই কম জন্ম নেয়। ৭ মার্চের ভাষণকে শিক্ষা পাঠক্রমে সিলেবাস হিসেবে গ্রহণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পরাধীন জাতিকে স্বাধীন দেশ দিয়ে গেলেন, সেই দেশেরই কিছু বিশ্বাসঘাতক তাঁকে হত্যা করল। একটি জাতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস, একটি আদর্শ ও স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি। জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনীতির কবি’ আখ্যায়িত করে বলেন, বঙ্গবন্ধু জানতেন, স্বাধীনতা ছাড়া এদেশের মানুষের মুক্তি আসবে না। জেল-জুলুম-নির্যাতন তাঁকে ঠেকাতে পারেনি, সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তীব্র সংগ্রাম-আন্দোলন ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালী জাতিকে বঙ্গবন্ধু উপহার দেন স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব একটি দেশ, মানচিত্র, জাতীয় পতাকা। আর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণই ছিল মূলত স্বাধীনতার ঘোষণা। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে এখন মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক শক্তিশালী, দেশকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। সে কারণে পার্শ¦বর্তী দেশ ছাড়াও অনেক উন্নত দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতাসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার প্রশ্নে বাঙালী জাতিকে বঙ্গবন্ধু যেভাবে সর্বাত্মক ঐক্যের বাঁধনে বেঁধেছিলেন, বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয় এমন নজির নেই। একটি মাত্র ভাষণে নিরস্ত্র জাতিকে তিনি সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেছিলেন। সেই মহান নেতার আদর্শকে বুকে নিয়ে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা দীপ্ত পায়ে দেশকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন অগ্রসরমান এক বিস্ময়কর জাতি হিসেবে। শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, কালজয়ী মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এদেশ কখনও স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু কখনও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ছিলেন না, বরং সাংগঠনিক সম্মোহনী শক্তি দিয়ে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাও সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও সামরিক শাসন মোকাবেলা করে ক্ষমতায় থেকে দেশকে বিশ্বের বুকে দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়ক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, যে মানুষটি ১৭টি বছর জেল-জুলুম নির্যাতন সহ্য করে দেশকে স্বাধীন করলেন, সেই জাতির পিতাকে এদেশের মাটিতেই কিছু কুলাঙ্গার ও বেইমানদের হাতে জীবন দিতে হলো। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশ পেতাম। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর আমরা ভিক্ষুকের জাতি, দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছিল বলেই জাতির পিতার হত্যার বিচার হয়েছে, জাতি কিছুটা কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। ষড়যন্ত্র এখনও হচ্ছে, হবে। সম্মিলিতভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার শক্তি আওয়ামী লীগের রয়েছে। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পথে বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন বলেই আমরা পেয়েছি মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে বিভক্ত করে ১৫ আগস্টের পথকে প্রশস্ত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধারণ করে তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির ভিত্তি রচনা করে গিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। তাঁর স্বপ্ন ছিল মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার। ৪৩ বছর পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। সোনার মাটি ও মানুষকে কাজে লাগিয়ে সারাবিশ্বে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। জাতীয় পার্টির ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসম্ভব সাহসী ও তাঁর সম্মোহনী শক্তি ছিল প্রখর। এ কারণেই তিনি পৃথিবীর সেরা নেতাদের অন্যতম হন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণই ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। বঙ্গবন্ধুকে অনুধাবন করতে হলে তাঁর আদর্শ, দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালবাসাকে জানতে হবে, অনুসরণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের নীলনক্সাকারীদের বিচার হয়নি। তদন্ত কমিশন করে এদেরও বিচার করতে হবে। মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার বিমূর্ত কালজয়ী এবং অসীম সাহসী নেতার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শত ষড়যন্ত্র করেও চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধুর নাম কখনও মুছে ফেলা যায়নি, যাবেও না। ইতিহাসের খলনায়ক ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত জিয়াউর রহমান সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন।
×