ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এক হালি গোল খেয়ে বিধ্বস্ত রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ১০ নভেম্বর ২০২০

এক হালি গোল খেয়ে বিধ্বস্ত রিয়াল মাদ্রিদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রীতিমতো অবাক করা ব্যাপার। ভ্যালেন্সিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামলেই কেমন যেন নড়বড়ে হয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। আর সেটা যদি প্রতিপক্ষের মাঠ মেস্টালা স্টেডিয়ামে হয় তাহলে তো কথাই নেই। রবিবার রাতে আরও একবার এ দৃশ্য দেখা গেছে। তবে এবার যা ঘটেছে তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। অন্যবার ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে ড্র কিংবা অল্প ব্যবধানে হেরেছে রিয়াল। মাঝে মধ্যে জয়ও পেয়েছে। কিন্তু পরশু রাতে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে স্বাগতিক ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ৪-১ গোলে হেরেছে সফরকারী রিয়াল। অথচ ম্যাচের ২৩ মিনিটে করিম বেনজেমার সৌজন্যে প্রথম গোল করেছিল জিনেদিন জিদানের দলই। এরপরই রিয়ালের ডিফেন্ডাররা যেন প্রতিপক্ষকে গোল উপহার দিতে প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। একে একে চারটি গোল ভ্যালেন্সিয়াকে এক প্রকার উপহার দেন রিয়ালের ফুবলাররা। এর মধ্যে তিনটি পেনাল্টি আর একটি আত্মঘাতীর মাধ্যমে। আরও অবাক করা তথ্য হচ্ছে, রিয়ালের চার ডিফেন্ডার প্রত্যেকে প্রতিপক্ষের একটি করে গোলে সহায়তা করেছেন। প্রথমে ৩৫ মিনিটে রাইটব্যাক লুকাস ভাসকুয়েজের হ্যান্ডবলের কারণে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল পেয়ে সমতা ফেরায় ভ্যালেন্সিয়া। প্রথমে কার্লোস সোলেরের স্পট কিক ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। এরপর ফিরতি বলে স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডারের নেয়া শট পোস্টে লেগে ফেরার পর কোনাকুনি শটে ইউনুস মুসা লক্ষ্যভেদ করেন। কিন্তু সোলের স্পট কিক নেয়ার আগমুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের মিডফিল্ডার মুসা ডি বক্সে ঢুকে পড়ায় ভিএআরে দেখে ওই পেনাল্টি গোল বাতিল করেন রেফারি। এরপর পুনরায় নেয়া পেনাল্টি শটে গোল করেন সোলের। এরপর ৪৩ মিনিটে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় ভ্যালেন্সিয়া। বিরতির পর ১০ মিনিটের ব্যবধানে স্বাগতিকদের আরও দুই গোল উপহার দেন রিয়ালের দুই ডিফেন্ডার। ৫৪ মিনিটে গোমেজকে লেফটব্যাক মার্সেলো ফাউল করলে ম্যাচে দ্বিতীয়বার পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে স্কোরলাইন ৩-১ করেন সোলের। এরপর ৬৩ মিনিটে ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন আরেক সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক সার্জিও রামোস। ডি বক্সে স্প্যানিশ তারকার হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। স্পট কিকে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ২৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার সোলের। চলমান লীগে চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের এটা দ্বিতীয় হার। এর ফলে এই মাঠে রিয়ালের টানা ব্যর্থতার তালিকাটা আরও বড় হয়েছে। এই হারে আট ম্যাচে পাঁচ জয় ও এক ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নেমে গেছে রিয়াল। ১১ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে ভ্যালেন্সিয়া, এক ম্যাচ বেশি খেলেছে তারা। আরেক ম্যাচে গ্রানাডাকে ২-০ গোলে হারিয়ে নয় ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে রিয়াল সোসিয়েদাদ। গেটাফের মাঠে ৩-১ গোলে জেতা ভিয়ারিয়াল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে। সাত ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ১১ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে বার্সিলোনা। বাজে এই হারের জন্য কোন অজুহাত দাঁড় করাননি রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। ম্যাচ শেষে ফরাসী গ্রেট বলেন, আমরা এক হাজার অজুহাত খুঁজে পেতে পারি। এটি ব্যাখ্যা করতে চাইলে প্রত্যেকে কোন না কোন কারণ খুঁজে পেতে পারে। তবে আমাদের অজুহাত খুঁজতে যাওয়া উচিত নয়। কারণ এই দলের সবাই রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী তারকা বলেন, আমরা প্রথম আধা ঘণ্টা ভাল খেলেছিলাম। তবে স্কোরবোর্ডে সমতা আসার পর ম্যাচ পুরোপুরি পাল্টে যায়। এমনটা আমাদের বেলায় অনেকবার ঘটেছে। আমি এটা পছন্দ করি না। এখন আমাদের কি ভুল হচ্ছে সেটা বিশ্লেষণ করতে হবে। পেনাল্টি প্রসঙ্গে জিদান বলেন, তিনটি পেনাল্টি ও একটি আত্মঘাতী গোল আমাদের জন্য একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল। আমি কোচ; দায়টা আমার। আমাকেই সবকিছুর সমাধান বের করতে হবে।
×