স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ নগরীর আকুয়া এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের জমি জবরদখল করে সাবেক ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের প্রয়াত পুত্রের নামে প্রতিষ্ঠা করা ডাঃ মুশফিকুর রহমান শুভ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের স্থাপনা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব উল আহসানের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এক অভিযান পরিচালনা করে উচ্ছেদসহ এই স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছে। সিটি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক ধর্মমন্ত্রী তার প্রয়াত ভাই আকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফাজ সরকারের সহায়তায় অবৈধভাবে আড়াই একরের বেশি জমি জবরদখল করে গত ২০১৭ সালে পুত্রের নামে প্রতিষ্ঠা করেন ওই বিদ্যালয়। ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকারমুল হক টিটু জানান, অবৈধ দখলদার ও স্থাপনা উচ্ছেদের চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোমবারের এই উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। আগামীতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান মেয়র। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের পুত্র ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত জানান, জায়গাটি পতিত থাকায় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সাবেক ধর্মমন্ত্রী তার নিজ এলাকায় প্রয়াত পুত্রের নামে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। অথচ মামলা চলমান অবস্থায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি জানান, এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই নয়। সাবেক ধর্মমন্ত্রীর পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
গত ২০১৮ সালে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার আগ পর্যন্ত জায়গাটি সাবেক পৌরসভার দখলেই ছিল। স্থানীয়দেরও দাবি দীর্ঘদিন যাবত কিছুটা নিচুশ্রেণীর এই জমি সাবেক ময়মনসিংহ পৌরসভার নিয়ন্ত্রণ ও দখলেই ছিল। কিন্তু গত ২০১৭ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক ধর্মমন্ত্রী ও তার প্রয়াত ভাই আকুয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আফাজ সরকার বালু ফেলে জায়গাটির প্রায় আড়াই একর জমি ভরাট করেন এবং পরবর্তীতে ধর্মমন্ত্রী তার প্রয়াত পুত্র ডাঃ মুশফিকুর রহমান শুভর নামে এই জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। স্থানীয়রা জানায়, ডাঃ মুশফিকুর রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর করোনার আগে প্রায় ৩০০ ছাত্রী ভর্তি হয়েছিল। এ নিয়ে সিটি কর্তৃপক্ষ একাধিকবার সিটি কর্পোরেশনের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিস দিয়েছিল।
এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। সিটি কর্পোরেশনের ভূসম্পদ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আদালতে দায়ের করা মামলাটি খারিজ হওয়ার পর সোমবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।