ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জাতির পিতাকে উৎসর্গ বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ৯ নভেম্বর ২০২০

জাতির পিতাকে উৎসর্গ বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এ তালিকায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টও ছিল। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল করা হয়েছিল এসব পরিকল্পনা। তবে বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ দিয়ে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বাফুফে। ম্যাচ দুটি উৎসর্গ করা হবে জাতির পিতার নামে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, নেপাল দলকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়ে ঢাকায় এনেছি। এই ম্যাচ দুটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন করা হবে। জাতীয় দলের ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, ফুটবলাররা করোনার কারণে অনুশীলনের বাইরে ছিল দীর্ঘদিন। তাই দ্রুত তাদের ফিটনেস ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। ঢাকায় ম্যাচ শুরু হতে এখনও কয়েকদিন বাকি আছে। প্রথম ম্যাচের পর বোঝা যাবে খেলোয়াড়দের ফিটনেসের কি অবস্থা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, মহিউদ্দিন আহমেদ, সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এই ম্যাচ দুটি আমরা জাতির জনককে উৎসর্গ করতে চাচ্ছি। আমাদের অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিল। চার-পাঁচটা আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম করতে চেয়েছিলাম। করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতে ফুটবল খেলে অনেকের সঙ্গে ভূমিকা রেখেছিলেন সালাউদ্দিন। এ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন বলেন, ফুটবলাররা বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। করোনাকে পরাজিত করে আমরা মুজিব শতবর্ষ প্রোগ্রাম করব। সরকারের সব নিয়ম-কানুন মেনে ফিফা থেকে অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ আয়োজন করছি। আশাকরি সাফলভাবে ম্যাচ দুটি শেষ করতে পারব। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী ১৩ ও ১৭ নবেম্বর নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচ সামনে রেখে একটি বিষয়ে জোর দিয়েছেন সালাউদ্দিন। সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দল যেন ভাল পারফর্ম করতে পারে। খেলোয়াড় খেলতে চায় জেতার জন্য। কোন ম্যাচ বাফুফে প্রেসিডেন্ট বা নির্বাহী কমিটির কেউ জেতাতে পারবে না। খেলতে হবে খেলোয়াড়দের। আমার মনে হয় এখন ওদের বলার সময় এসেছে। সালাউদ্দিন বলেন, ফুটবলারদের অনেক সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কাজেই তাদের কাছে ভাল কিছু প্রত্যাশা করছি। জাতীয় দলের অনুশীলন দেখেছেন সালাউদ্দিন। সেখানে জামাল-ভুঁইয়ারা অনুশীলন সুবিধা দেখে কিছুটা অবাক হয়েছেন বাফুফে বস। খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি এত সুবিধা পাননি। তিনি বললেন, বোকা হয়ে গেছি এসব সুযোগ-সুবিধা দেখে। তারা যে জার্সি গায়ে দিয়ে অনুশীলন করেছে তা গায়ে দিয়ে আমি জাতীয় দলেও খেলিনি। আমাদের একটা জার্সি দেয়া হতো। বিকেলে খেলে রাতে ধুয়ে পরের দিন সেটা পরে খেলতে হতো। মাঠে বল থাকত দুটো। একটা বল দিয়ে ৩০ জন অনুশীলন করতাম। আরেকটা বল দিয়ে অনুশীলন ম্যাচ খেলতাম। তিনি আরও বলেছেন, এখন মাঠে থাকে অগণিত বল। খেলোয়াড়রা প্রশিক্ষণ ভাতা পাচ্ছে। আমরা কাজ করি খেলোয়াড়দের জন্য। সে কারণে ফুটবলারদের এখন পারফর্মেন্স দেখাতে হবে। এত সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কারণে চাওয়া প্রতিদান। তিনি বলেন, দুপুরে কোচ জেমি ডে খেলোয়াড়দের চাহিদা জানিয়ে আমাকে ফোন করেছিল। ভাতাসহ অন্যান্য বিষয়ে কথা হয়েছে। তাদের লীগের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আমার কথা হচ্ছে তারা যা চাচ্ছে তাই দেয়া হবে। ফলে তাদেরও দিতে হবে। কলকাতা মোহামেডানে খেলতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। সালাউদ্দিন বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। আমি তো চাই দেশের খেলোয়াড়রা বিদেশে খেলুক। এটা আমার স্বপ্ন। আমি চাই তারা এশিয়ার সব দেশে খেলুক। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে চতুর্থ মেয়াদে কাজ শুরু করেছেন কাজী সালাউদ্দিন। এই কমিটির কাছ থেকে প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছেন ফুটবলাররা। প্রত্যেক পজিশনে বিদেশী কোচিং স্টাফ যোগ করা হয়েছে। ভালমানের হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই তুলনায় জাতীয় দলের সাফল্য অশানুরূপ নয়। এ অবস্থায় নেপালের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরা খেলা প্রত্যাশা করছি।
×